পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে গনমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব জায়গাতেই চলছে আলোচনা সমালোচনা। একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছেন তিনি সেই সাথে তার এই বক্তব্যের কারনে এখন খোদ আওয়ামীলীগ বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, আমি তার ধারে কাছেও নেই। এটি ডাহা মিথ্যা।
সোমবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে আমি তার ধারে কাছেও নেই। তাহলে কি এটা মিথ্যা অভিযোগ? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি ডাহা মিথ্যা। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলিনি।
তাহলে কি বলেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গ্লোবাল কনটেস্ট যে অস্থিতিশীল অবস্থা তার প্রেক্ষিতে স্থিতিশীলতার কথা বলেছি।
সম্প্রতি বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মধ্যে পড়েন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ অবস্থায় রোববার (২১ আগস্ট) বক্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ। নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানানো হয়।
গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশেরই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটি সম্ভব যদি শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দেয় ভারত।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। খোদ আওয়ামী লীগও এ বক্তব্যে বিব্রত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা বলছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন তা দেশের জন্য অসম্মানজনক।
অন্যদিকে বিএনপি লুফে নিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য। দলটির নেতারা এর তীব্র সমালোচনা করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটি তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। এটি আমাদের সরকারের বক্তব্য না, দলেরও না। এই ধরনের অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না। শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্য প্রত্যাহার না করে জানান, তার বক্তব্য ভিন্নভাবে গণমাধ্যমে এসেছে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, তোমাদের সরকারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণে আমাদের এখানে সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। আমি দিল্লিতে মিটিং করার সময় বলেছি, তোমাদের একজন মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা আমাকে বলেছে। তখন আমি বলেছি, দুই দেশেরই উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা প্রয়োজন আর সেই স্থিতিশীলতার জন্য শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত,বিতর্কিত এই বক্তব্য দেওয়ার আগে গত ১২ আগস্ট সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে। এই বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।