সন্তান প্রসব কিংবা গর্ভবতী মায়েদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে নানান জটিলতার মুখে পড়েন গ্রামের মানুষ। তবে এখন অবশ্য সেই চিরচেনা চিত্র অনেকটা বদলে গিয়েছে। কিন্তু মানুষের মনে নানা ভিতি এবং অদক্ষ চিকিৎসকদের কারনে মাতৃমৃত্যুর হার আওনেকটাই বেশি। এমন ঘটনা সারা দেশের গ্রামগুলোতে ঘটে চলেছে অহরহ।
সকালে প্রসব বেদনা শুরু হয়। স্বজনরা প্রথমে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক সবুজকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সবুজ তার প্রেসার মেপে চলে যান। পরে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সমীর ভূঁইয়ার স্ত্রী লাবনী রানীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনি গর্ভবতী মহিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রসব স্বাভাবিক করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। প্রায় ৬ ঘন্টা তিনি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। পরে অবস্থার অবনতি দেখে স্বজনরা তাকে স্পিডবোটে করে গোলচিপায় নিয়ে আসেন। সেখানে পাবলিক টয়লেটের সামনে সন্তান প্রসব করেন। তবে সন্তানটি মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে।
বুধবার দুপুরে হরিদেবপুর ফেরিঘাট সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের স্ত্রী ও গ্রাম্য চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে এমনটি ঘটেছে বলে দাবি করেছেন প্রসূতি ও তার স্বজনরা। প্রসূতি রিমা আক্তার রাঙ্গাবালী উপজেলার চর মনতাজ ইউপির বিপ্লবের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন এবং বাড়িতে আছেন।
রিমার শাশুড়ি পারভীন বেগম জানান, বুধবার সকালে বাড়িতে বসেই তার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এ সময় স্বজনরা প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক সবুজকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সবুজ তার প্রেসার মেপে চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে চলে আসেন। পরে চরমোন্তাজ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সমীর ভূঁইয়ার স্ত্রী লাবণী রানীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। প্রথমে প্রসূতি বিশেষজ্ঞ প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রিমাকে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন। প্রায় ৬ ঘন্টা তিনি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। পরে রিমার অবস্থার অবনতি দেখে স্বজনরা তাকে স্পিডবোটে করে গলাচিপায় নিয়ে আসেন।
পারভীন আরও জানান, সেখান থেকে পটুয়াখালী নিয়ে যাওয়ার পথে হরিদেবপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে রিমা প্রসব করেন। স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক অনুতোষ দাস নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসূতি রিমা আক্তার বলেন, আমাকে বাড়ি থেকে না নিয়ে গেলে আমিও মারা যেতাম। আমার স্বজনরা বারবার লাবনী রানীকে চিকিৎসা বন্ধ করতে বলে। তবে তাকে জোরপূর্বক চিকিৎসা করানো হয়।
অভিযুক্ত লাবনী রানী বলেন, আমি মিডওয়াইফারি প্রশিক্ষিত। আমি এই রোগীর বাড়িতে গিয়ে এক ঘন্টা থাকলাম। তার স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করা হয়েছে। পরে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। এর আগে গ্রাম্য চিকিৎসক সবুজ তার চিকিৎসা করেন।
পল্লী চিকিৎসক সবুজ বলেন, ‘আমাকে ফোন করার পর রোগীর প্রেসার মেপে এসেছি। এছাড়া কোনো চিকিৎসাও করিনি।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে মানুষ গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসার ব্যপারে অনেকটাই সচেতন বিশেষ করে দেখা যায় শহর অঞ্চলে যারা বসবাস করে তাদের মধ্যে সচেতনতা অনেকটাই বেশি। কিন্তু গ্রাম অঞ্চলে যারা বসবাস করছেন তাদের মধ্যে এর প্রভাব অনেক কম যার ফলে অদক্ষ চিকিৎসদের হাতে পড়ে অনেকে নানা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।