কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক নওরীন রহমান সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় খারাপ কাজের হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ দায়ের করার পরেও তার মামলা নেয়নি বলে একটি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন। আজ বুধবার অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে তিনি এই সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন, সেই সময় তিনি অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। এমনকি যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে আত্মহনন করবেন এমন হুমকি দেন।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে নওরীন রহমান বলেন, ‘আমার জীবন আজ হুমকির মুখে। শুধু ছাত্রলীগকে ভালোবাসা এবং ছাত্রলীগের রাজনীতি করার জন্য আমাকে নানাভাবে নি”/র্যা’তন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আদর্শ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের হাত ধরে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগে সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করি।’
নওরীন বলেন, ‘তখন থেকে তার (চ্যালেঞ্জ) বাসায় আমাকে বিভিন্ন কারণে ডাকতো। পরে একদিন সে যেকোনো শর্তে তার সঙ্গে দল করতে যে কোনো শর্তে রাজি হতে বলে। আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। কিন্তু চ্যালেঞ্জ কোনোরকমে ছবিটা পেয়ে যায়। কিন্তু আমার এক দাদার সঙ্গে একটি পারসোনাল টি-শার্ট পরা ছবি চ্যালেঞ্জ কোনোভাবে পায় এবং বাসায় ডেকে ওই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে কুপ্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে ছবি ভাইরাল করে দিবে বলে। আমি ভয় পেয়ে দ্রুত চলে আসি এবং নিজেকে একা রাখার চেষ্টা করি।’
ছাত্রলীগের এ নেত্রী বলেন, “এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে চ্যালেঞ্জ তার সহকর্মীদের ওই ছবি এবং আমার আরও কিছু এডিট করা ছবি ফেক আইডি খুলে বাজে ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে প্রচার করে। রাস্তা-ঘাটে দেখা হলেই চ্যালেঞ্জের সহযোগীরা আজেবাজে কথাবার্তাসহ আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। দিন দিন মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কোনো উপায় না পেয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু থানায় অভিযোগ দায়েরের তিন দিন পরও থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো চ্যালেঞ্জসহ তার সহযোগিরা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তারপর থেকে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে আমার নামে আরও বেশি আজেবাজে কথা লিখে পোস্ট করা হচ্ছে।’
নওরীন রহমান বলেন, “পুলিশকে বারবার জানালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। গতকাল মঙ্গলবার এসপি অফিসে গিয়েছিলাম, তিনি অফিসে ছিলেন না। বিষয়টি আমি জেলা নেতাদের জানিয়েছি, তারা কোনো প্রতিকার নিচ্ছেন না। তারা শুধু আমাকে আশ্বাস দিচ্ছেন যে, ‘‘হ্যাঁ আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব’’।’
তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার এটার যদি কেউ কোনো প্রতিকার না করে, তবে আমার আত্মহনন করা ছাড়া উপায় থাকবে না। আমি আত্মহনন করলে পুলিশ প্রশাসন, জেলা নেতারা সবাই দায়ী থাকবে।
জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার নওরীন কুষ্টিয়া মডেল থানায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। গতকাল সোমবার তিনি জেলা ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন।
মো. দেলোয়ার হোসেন যিনি কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এ ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছেন, আজ অভিযোগকৃত সকল আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে মামলার ধারা বা নম্বর বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। তবে তিনি বলেছেন মামলা যেহেতু হয়েছে সেহেতু দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।