ভুয়া করো”না সার্টিফিকেট, জালিয়াতি ও প্রতারণার দায়ে তিন বছরের সাজা ভোগ করার পর জামিনে মুক্ত ডা. সাবরিনা কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি কারাবন্দী নারীদের জীবন নিয়ে একটি বই লিখেছেন। বইটি এবার একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে।
বই লেখা ও কারাজীবনের অভিজ্ঞতা জানতে কথা হয় ড. সাবরিনার সাথে। কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে শুক্রবার ড. সাবরিনা বলেন, হাজতি হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা ছিল, কয়েদি হিসেবেও আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে। শ্রেণিপ্রাপ্ত আসামি ছিলাম আবার ডিভিশনের আসামিও ছিলাম। একদম যে নর্মাল ওয়ার্ড যেখানে ৩৫-৪৭ জন আসামি থাকে সেখানেও আমি থেকেছি। সেখানে ২টা কম্বল দেওয়া হতো বিছিয়ে ঘুমানোর জন্য। সবার জন্য মুঠম হাত জায়গা বরাদ্দ ছিল। সবাই আমাকে আদর করে চার আঙুল জায়গা বেশি দিত। তারা বলত বিসিএস ক্যাডার তাকে না হয় ৪ আঙুল জায়গা বেশিই দেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগারে অনেক বই পড়তাম। একটা বড় লাইব্রেরি আছে। সেখানে অনেক বই সংগ্রহ করে রাখা। আমি বই পড়তাম এবং প্রথম দিন থেকেই ভাবতাম একটা বই লিখব। আগে লিখতাম কিন্তু তবে নিভৃতে। পরে ভাবলাম আমাকে বই লিখতেই হবে।
আসন্ন বইমেলায় তার নতুন বই আসছে বলে জানান ড. সাবরিনা। তিনি বলেন, বইটা প্রথম সপ্তাহ থেকেই বই মেলাতে পাওয়া যাবে আহমেদ পাবলিশার্স স্টলে। ৫৪১-৫৪৪ এই চারটা নম্বরের স্টলে বইটা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া রকমারি ডট কমেও আমার বইটা পাওয়া যাবে। এই বইয়ে নিজের কোনো ঘটনা নেই, এখানে স্থান পেয়েছে নারীবন্দিদের লোমহর্ষক সব ঘটনা।
২৩ জুন, ২০২০ তারিখে, ড. সাবরিনাসহ ছয়জনকে আটক করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেও তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করে জামিন পান। প্রায় তিন বছর কারাগারে থাকার পর গত বছরের ৫ জুন জামিনে মুক্তি পান সাবরিনা।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ৫ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলী তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর একই বছরের ২০ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।
২০২২ সালের ১৯ জুলাই, অতিরিক্ত মহানগর প্রধান হাকিম তোফাজ্জল হোসেন ড. সাবরিনা চৌধুরী এবং তার স্বামী আরিফুল চৌধুরী, কোম্পানির সিইও, ১১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। রায়ে বলা হয়, দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রত্যেককে তিন বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড, দণ্ডবিধির ৪৬৬ ধারায় চার বছরের কারাদণ্ড ও চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দণ্ডবিধির ৪৭১ ধারায় অনাদায়ে চার মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং চার বছরের কারাদণ্ড এবং চার হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।