বাংলাদেশে সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দিনের সফরে মালদ্বীপে গিয়েছিলেন, এরপর গতকাল (সোমবার) অর্থাৎ ২৭ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে তিনি দেশে ফিরেছেন। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফেরেন এই সময় তার সফরসঙ্গী যারা ছিলেন তারাও তার সাথে ছিলেন। তাদের বহন করা বিমানটি বিকেল ৫টায ৩০ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। প্রধানমন্ত্রী দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহের আমন্ত্রণে গত ২২ ডিসেম্বর মালদ্বীপে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী দেশের ফেরার পর আজ মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর তিনি একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ঐ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি মানুষের জন্য সুবিচার এবং গনমানুষের অধিকার বিষয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ন্যায়বিচার মানুষের প্রাপ্য। সেটা যেন সব সময় পায় সেটা আমরা চাই। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। তাই আমরা জানি বিচার না পাওয়ার কষ্টটা কী। সরকার এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা নিশ্চিত করবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড জুডিশিয়ারি’ শীর্ষক বাংলা ও ইংরেজিতে মুজিব স্মারক গ্রন্থ এবং ‘ন্যায়কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষের স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গা, তারা সব সময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, তারা মানবাধিকারের কথা বলে; কিন্তু আমাদের যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল, আমরা যে ন্যায়বিচার পাইনি, তারপর যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হলো, তখন খু’নিদের আশ্রয় দিয়ে বসে আছে।
তিনি বলেন, নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা, আর খু’নি রাশেদ এখনো আমেরিকায়। তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়, সেটিই আমার কাছে অবাক লাগে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি এবং স্মারক গ্রন্থ ও স্মরণিকার সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান স্বাগত বক্তৃতা করেন। মুজিব স্মারক গ্রন্থ এবং স্মরণিকার ওপর অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচারিত হয়।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা, বঙ্গমাতাসহ ’৭৫-এর ১৫ই আগস্টের সব শহীদ এবং বিজয়ের এই মাসে সব মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে পুলিশের একটি বিশেষ বাহিনী র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে। এই বাহিনী মানবাধিকারের প্রতি অসম্মান, মৌলিক স্বাধীনতা খর্ব সহ বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করছে এমনটিই বলে হয় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞায়। মার্কিন সরকার সে দেশে র্যাবের সাবেক প্রধান বেনজিরের ভিসার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধও ঘোষণা করে, যিনি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত র্যাবের ডিজি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, “মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনে তার জড়িত থাকার কারণে, তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য করে তোলে”।