প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার নামে কুখ্যাত অর্থপাচারকারী ৩৪টি মামলা মাথায় নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন এমনটাই জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রমতে। বেশির ভাগ পাচার করা অর্থই কানাডা ও ভারতে পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০০৯ সালের অক্টোবরে, দুদকের তদন্তে অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি সামনে আসার আগেই পিকে হালদার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তদারকি সংস্থা) ঘুমিয়ে ছিলাম বলেই পিকে হালদার সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম বলেই পিকে হালদার তৈরি হয়েছে। রোববার (১২ জুন) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মামলার শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন। মামলার শুনানি শেষে হাইকোর্টে জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানির আমানতকারী মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরীকে ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৮ টাকা এফডিআর দিতে বলা হয়েছে। আদালত জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইমদাদুল ইসলামকে ৩১শে আগস্টের মধ্যে আমানতকারীর এফডিআর পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
চলুন পরিষ্কার করা যাক, আপনি যদি এই সময়ের মধ্যে টাকা না দেন তাহলে আমরা আপনার কোম্পানি বন্ধ করে দেব। প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগ করব। এ সময় আদালতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাসেরকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আপনার দায়িত্ব তদারকি করা. তারা গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করবে, আর গ্রাহক জমানো টাকা নিয়ে রাস্তায় হাঁটবে, এটা হতে পারে না। এক্ষেত্রে শুধু চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তার দায়িত্ব পালন করতে পারে না। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মর্যাদা থাকবে না। আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়াইস আল হারুনী। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
উল্লেখ্য, দুদকের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পুর্বেই পিকে হালদার দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি পিকে হালদার গ্রেফতারের পরপরই তিনি যে ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন সেই বিষয়টি সকলের প্রকাশ্যে আসে। তবে তার সকল কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পু্র্বে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেলেও শেষ প্রর্যন্ত্য তার শেষ রক্ষা হয়নি। ভারতে, শিবশঙ্কর হালদারকে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। গত শনিবার (১৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় তার স্ত্রী সুস্মিতা ও ভাই প্রীতিশকেও।