বাংলাদেশে জ্বালানী তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারন মানুষ এবং সেই সাথে দেখা যাচ্ছে যনমনে একরকম ক্ষোভ তৈরি হয়ে গেছে। সরকারের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন অনেকঈ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। সরকারের তরফ থেকে এর কারন হিসেবে বলা হচ্ছে বিশ্ব বাজারে জ্বালানী তেলের দাম বেড়েছে।
জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম মূল্যস্ফীতি বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক। ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, একটি দেশের শক্তির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে জ্বালানি তেলের দাম একেবারে না বাড়িয়ে ধাপে ধাপে বাড়ানো যেত। তাই আমার পরামর্শ হচ্ছে তেলের দাম কমিয়ে ধাপে ধাপে বাড়াতে হবে।
বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘জ্বালানি তেলের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কি এখন এড়ানো যেত?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, দুর্নীতি, চুরি, অব্যবস্থাপনা কমিয়ে দক্ষতা বাড়াতে পারলে এই মুহূর্তে জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ করে এত বাড়ত না।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অনেকেই বলছেন, অন্য দেশে তেলের দাম আমাদের দেশের তুলনায় কম। তবে আমি বলছি নেপাল ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া অন্য কোনো দেশে তেলের দাম বাড়েনি। ভিয়েতনাম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ কিন্তু দেখুন ভিয়েতনামে ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ৯৭.৯ টাকা। আমরা কার সাথে তুলনা করছি? আমরা বলছি হংকংয়ে জ্বালানি তেলের দাম বেশি। এটা সত্য. কিন্তু আমাদের দেখতে হবে তাদের মাথাপিছু আয় কত। তাই যেকোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করতে গেলে মাথাপিছু আয়ের দিকে তাকাতে হবে। জ্বালানির দাম মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। পরিবহন খরচ বাড়বে। বাস, ট্রাক ও লঞ্চের ভাড়া বাড়বে। এরই মধ্যে সব কিছুর দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডিজেলের দাম রেকর্ড বৃদ্ধির ফলে কৃষির ওপর চাপ বাড়বে। অনেক কৃষক ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার করেন। কৃষি উৎপাদন খরচ বাড়বে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। ফলে আমাদের আমদানি ব্যয় বাড়বে। এই মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক, জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী, বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, দেশে জ্বালানী তেলের দাম নিয়ে নানা আলোচনা চলছে এবং সেই সাথে দেখা যাচ্হে এই তেলের দাম নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা মিশ্র পতিক্রিয়া শুরু হয়েছে এছারাও আওনেকে তেলের দাম হঠাৎ করে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।