বিশ্বের সমগ্র দেশ গুলোর উপর নানা ভাবে এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর হস্তক্ষেপ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এক কথায় দেশটিকে বিশ্বের মোড়ল খ্যাত দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। সম্প্রতি দেশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে ৭ প্রশাসন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা। এই প্রসঙ্গ তুলে বেশ কিছু কথা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খু/নি রাশেদ চৌধুরীর কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘একটা খুনিকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আটকে রেখেছে (আশ্রয় দিয়েছে), তারাই আবার আইনের কথা বলে। যে ব্যক্তি (রাশেদ চৌধুরী) মানবতা ভঙ্গ করলো, এতগুলো মানুষকে মে/রে ফেললো, তাকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।’ শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি এলিট ফোর্স র্যাব এবং এর বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে ঢাকা। এ নিয়ে এক পর্যায়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপও হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ প্রসঙ্গটি আসে। এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা (দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) নিজেরা আলাপ করছি। সময় এখন একটা সমস্যা, আমরা বসে আলাপ করবো। আরেকটা সমস্যা হলো রাশেদ চৌধুরীকে তো আ/ট/কে রেখেছে তারা, দেয় না।’
র্যাবের কারণে দেশে স/ন্ত্রা/সী কমেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি যে— তোমরা জ/ঙ্গি/বাদ দমন করতে চাও, বৈশ্বিক মা/দ/ক কমাতে চাও, মা/ন/ব/পা/চার বন্ধ করতে চাও; র্যা/ব এসব কাজই করছে। তারা শুদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। তোমাদের এটা (নিষেধাজ্ঞা) দেশবাসী গ্রহণ করেনি। র্যাবের প্রতি মানুষের একটা আস্থা আছে বলেও মনে করেন এ কে আব্দুল মোমেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তারা সহজে পয়সায় বিক্রি হয় না। এরকম একটা প্রতিষ্ঠান নিয়ে (যুক্তরাষ্ট্রের) এরকম (নিষেধাজ্ঞা) করা ঠিক হয়নি। এখন যাই হোক, তারা নিজেদের রিপোর্ট বের করেছে। ওনাদের কংগ্রেস অনেকটা বাধ্য করেছে এমন রিপোর্ট করতে। উনি (অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন) বলেছেন, আমরা আলোচনা করবো। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অনেক আলোচনার সুযোগ আছে— আমার এটা ভালো লেগেছে। তিনি বুঝেছেন যে, আমরা এতে অসন্তুষ্ট হয়েছি। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এখনই পাল্টা কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বরং বলছি যে, ভালো কাজ করছি। তোমরা আমাদের সঙ্গে কাজ করো। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। দোষারোপের মানসিকতা আমাদের নেই।’
এই নিষেধাজ্ঞাকে নিয়ে দেশ জুড়ে রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যেও ব্যপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্যে বাংলাদেশ সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এবং আড়্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়াকে ঘিরে অসন্তুষ প্রকাশ করেছে।