চিঠি লিখে বাসা থেকে শিক্ষার্থীদের ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়, ইতিপূর্বেও এমন ঘটনা ঘটেছে বহুবার। তবে প্রতিবারই এ ধরণের ঘটনার পেছনে থেকে যায় নানা কারণ। আর এরই জের ধরে এবার কুষ্টিয়ার মিরপুরে বাবার উদ্দেশ্যে চিঠি লিখে নিখোঁজ হয়েছে সামিউল ইসলাম স্বপ্ন (১১) নামে এক কিশোর। জানা গেছে, সে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের একতারপুর তাঁতীবন্দ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় সে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রশিদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্কুল ছাত্র সামিউল ইসলাম স্বপ্ন বারুইপাড়া ইউনিয়নের একতারপুর তাঁতীবন্দ গ্রামের তারেক আহমেদের ছেলে। সে স্থানীয় তাঁতীবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।
নিখোঁজ সামিউলের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সামিউল স্কুলে যায়। স্কুলে দুই ক্লাস শেষে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসে। বিকেলের পর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সামিউলের বন্ধু নাবিল জানায়, গতকাল ক্লাস চলাকালীন সামিউল বলে, আর কখনো দেখা হবে না। তারপর ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেল।
সামিউলের মা বলেন, আমার স্বামী ও তিনি দুজনেই কুঠি শিল্পে কাজ করেন। বাড়ির চাবি ছেলের কাছে রেখে তারা প্রতিদিন কাজে যায়। গতকাল তিনি বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘর তালাবদ্ধ। এ সময় তিনি সর্বত্র খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের সন্ধান পাননি। পরে ঘরের তালা ভেঙে স্যামুয়েলের স্কুলের ব্যাগ, খাতা, নোটবুক, টিফিন বক্স ও খাটের ওপর একটি চিঠি পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, বাবাকে সামিউল লিখেছে- “আব্বু তুমি আমাকে মাফ করে দিও। আমি চললাম আল্লাহর নামে। তোমরা সবাই ভালো থেকো। কেউ কষ্ট পাবে না। তোমাদের যদি কোনো ক্ষতি হয়, আমি সব খবর রাখবো। আমাকে খবর দেবে একজন। তোমরা আমাকে খুঁজবা না। আর যদি খোঁজো তাহলে আমাকে জীবিত পাবে না।”
ছেলের এমন কাণ্ডে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গেছেন সামিউল ইসলামের বাবা-মা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে শেষমেষ বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বাধ্য হন তারা।