সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আবাসিক হোটেলগুলোর বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। আবাসিক হোটেলগুলোতে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে অনেক হোটেলে ক্যামেরা বসিয়ে অনেক সময় প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর ঘ”/নিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টিও ক্যামেরায় তুলে নিচ্ছে কিছু ভিন্ন মানসিকতার ব্যক্তি। এরপর সেগুলো ব্যবহার করে হয়রানি করছে তাদেরকে। এমন একটি ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীতে।
সেখানে ‘পপুলার-২’ নামের হোটেলকক্ষের দরজায় ছিদ্র করে গো’পনে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কা’রাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি হলেন হোটেল ম্যানেজার শরীফুল ইসলাম (২৮) এবং একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা আবদুল নূর (২১)। শরিফুলের বাড়ি নওগাঁর পোরশায় এবং নূরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, রোববার (২৯ জানুয়ারি) ডাক্তার দেখানোর পর রাতে স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলে ওঠেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র। তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে নিয়ে রাজশাহীতে নিয়ে আসেন। রাতে হোটেল পপুলার-২ এ ওঠার ঘণ্টা দুয়েক পর তাদেরকে বেরিয়ে আসতে বলা হয়। তারা বের না হলে হোটেলের ম্যানেজার ও তার সহযোগীরা হোটেলের দরজায় কড়া নাড়তে থাকে। তাদের তোড়জোড়ে ঐ ছাত্র ও তার স্ত্রী দরজা খুলে দেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। আর এই টাকা না দিলে তাদের গোপনে রেকর্ড করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে হু”/মকি দেয়।
এ সময় ওই ছাত্র ও তার স্ত্রী তাদের সঙ্গে জোরাজোরি করে কোনোভাবে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে রাজশাহী স্টেশনে গিয়ে বাকি রাত কাটান। পরদিন সকালে ওই ছাত্র তার স্ত্রীকে ট্রেনে তুলে দিয়ে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসে। এরপর দুপুর থেকেই ওই ছাত্রকে ফোনে কল করা শুরু করেন হোটেলের কর্মীরা। তাদের কাছে তাদের দুজনের অনেক ভিডিও আছে, দাবি করে দেখা করতে বলে। ছাত্র বিষয়টি তার বিভাগের এক বড় ভাইকে জানায়। বিষয়টি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানালে বিষয়টি রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগকে জানানো হয়। তাদের সহায়তায় স্থানীয় লোকজন হোটেলে গিয়ে আব্দুন নূরকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তার মোবাইল ফোন জব্দ করে এবং সেসব ভিডিও পায়।
এ ঘটনার পর গত সোমবার রাতে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ৫ জনকে আসামি করে প”/র্নো”গ্রাফি আইনে মা”মলা করেন ওই ছাত্রী।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, গ্রে’ফতারকৃত দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার আলামত হিসেবে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোনে গোপনে রেকর্ড করা একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে যে মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে তাদের গো”পন ভিডিও পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা গোপনে ভিডিও করার যে ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে স্বীকার করেছে। এই মামলায় আরও তিনজন পলা”তক রয়েছে তাদেরকে ধরার জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।