বাংলাদেশে তিন বছরের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব শেষ করে গত জুলাই মাসে ঢাকা ছেড়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে অবসর নিয়ে মাত্র তিন দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি প্রতিষ্ঠান অ্যাকসিলারেট এনার্জিতে যোগ দেন। এবার প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ প্রধান হিসেবে তিনি আবার ঢাকায় ফিরেছেন।
অ্যাকসিলারেট এনার্জি বাংলাদেশে দুটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল পরিচালনা করছে। এর একটি প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব, অন্যটি সামিট গ্রুপের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া। এছাড়া, ২০২৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকারের জন্য এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে।
পিটার হাসের এই দ্রুত ক্যারিয়ার পরিবর্তন এবং বাংলাদেশে ফিরে আসা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি জ্বালানি খাতে অভিজ্ঞ নন। তবুও তাকে বাংলাদেশ প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে তার পূর্ববর্তী দায়িত্বকালে তৈরি হওয়া প্রভাব কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন ‘রিভলভিং ডোর’ আইনের শর্ত অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তারা দায়িত্ব ছাড়ার পর নির্দিষ্ট সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে লবিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারেন না। যদিও পিটার হাসের ক্ষেত্রে এই আইন লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।
অ্যাকসিলারেট এনার্জি ২০১৮ সালে বিনা দরপত্রে বাংলাদেশের সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সেবা শুরু করে। এটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। প্রতিষ্ঠানটি এই সেবার জন্য প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পায়, যা ১৫ বছরে দাঁড়াবে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
পিটার হাসের নিয়োগ নিয়ে অ্যাকসিলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট স্টিভেন কোবোস বলেন, “তিনি ভূরাজনীতি ও বাজারের ব্যাপক জ্ঞান রাখেন। মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থে তার অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশ্লেষকদের মতে, পিটার হাসের মতো উচ্চপদস্থ একজন ব্যক্তির দ্রুত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগদান এবং তার পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসার বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।