গেল বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই থেকেই দেশ সহ আন্তর্জাতিক মহলে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। এ দিকে বেশ কয়েকদিন আগে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, র্যাবের বিষয়ে তারা বলেছেন, র্যাবের যেভাবে কাজ করা উচিত ছিল, তারা সেভাবে কাজ করেনি, তাই র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার বন্ধে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
মন্ত্রী বলেন, তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, র্যাবের কেউ বেআইনি কাজ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। গাফিলতি করা র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের অনেকেই কারাগারে। যেমন নারায়ণগঞ্জে সাত খু’নের মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তার সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশে নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর আগেও তারা উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ডকে সহযোগিতা করেছে। এ ছাড়া সীমান্তের কিছু দুর্গম এলাকায় বিজিবির নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। সরকার নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে শীঘ্রই একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার কথাও বিবেচনা করছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে কিছু লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে।
মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, রাখাইনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ও জোরালো সহযোগিতা প্রয়োজন। মন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতের বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা ও আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
চলতি আগস্টের শেষ দিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কর্মসূচিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের অংশগ্রহণের আলোচনার মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার গেল বছরের শেষে দিকে র্যাবের উপর নানা অভিযোগ এনে জারী নিষেধাজ্ঞা। এরপর থেকেই শুরু হয় নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বর্তমানে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও বর্তমান র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর কিছু দিন এই আলোচনা বন্ধ থাকলেও জাতিসংঘের পুলিশ প্রধান সম্মেলনে অংশ নিতে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বলে এ নিয়ে আবারো শুরু হয় নতুন করে আলোচনা।