দীর্ঘদিন ধরে বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের ঘটনার মামলার রায় দিয়েছেন মাননীয় আদালত। আদালত তার রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। আজ (বুধবার) অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান যিনি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণা যে সময় দেওয়া হয় সেই সময় ২২ জনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। মামলায় দ’ন্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন আ’সামির মধ্যে ৩ জন পলাতক আছেন।
রায় ঘোষণা দেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ২২ জন আ’সামির মানসিক অবস্থা স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। অভিযুক্তদের কেউ রায় শুনে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাননি। প্রতিবাদ করা বা কোনো কিছু বলেনি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের আদালত কক্ষ থেকে বের করে আদালতের হা’জতখানায় রাখা হয়। এ সময় তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেননি।
এর আগে এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মাম’লার ২২ আসা’মিকে আদালতে হাজির করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কা’রাগার থেকে তাদের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়।
গ্রেপ্তার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোরশেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার পলা’তক তিন আসামি হলেন- মোরশেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহার বহির্ভূত আসা’মি।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হ’/ত্যা করেন। রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পু’লিশ।
ওই বছরের ৭ অক্টোবর বরকত উল্লাহ যিনি আবরারের বাবা তিনি বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে চকবাজার থা’নায় একটি হ’/ত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে পু’লিশ ২২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এই ২২ জনের মধ্যে ৭ জন আসা’মি আদালতে ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা সকলেই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এমনটাই জানা যায়। আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থেকে পড়াশুনা করতেন।