সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দের একপর্যায়ে নিজ মাকেই ‘গু”লি’ করে প্রয়াত করার ঘটনায় অভিযুক্ত সেই মাইনুলকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময়ে তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে ‘অ’স্ত্র’ও উদ্ধার করা হয়। জেসমিন আক্তার-শামসুল আলম মাস্টার দম্পতির বড় ছেলে মাইনুল। এদিকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এক মাস আগে শামসুল আলম মাস্টার অসুস্থ হয়ে মারা যান। বিভিন্ন ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ দেখতে মঙ্গলবার সকালে মেয়ে শায়লা শারমিন নিপাকে নিয়ে ব্যাংকে যান জেসমিন আক্তার। ব্যাংক থেকে ফেরার পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ছেলে মইনুল ইসলাম। কেন তাকে না বলে ব্যাংকে গেল তা নিয়ে তার মা ও বোনের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি বলেন, “একপর্যায়ে মইনুল কোমর থেকে ‘অ’স্ত্র” বের করে বড় বোনকে প্রথমে গুলি করে। গু/লি/টি/ বো”নে’র শরীরে’ না গিয়ে দেয়ালে লাগে। পরে সে মাকে লক্ষ্য করে ‘গু”লি” করে। পর তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত মইনুল জানায়, ব্যবহৃত অ/স্ত্র/টি তার প্রয়াত বাবার।” মইনুল তার বাবার অফিস থেকে এই /অ/স্ত্র নিয়ে গেছে বলেও দাবি করেন। ঘটনার পর অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। চকরিয়া এক পরিচিতের কাছে আশ্রয় নেয়। পরে সাতকানিয়ায় যান। সাতকানিয়ার রসুলপুর এলাকার একটি /গুদামে অ/স্ত্র রা/খা। এর আগে গ্রেফতার এড়াতে সে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দেয়। সাতকানিয়ার কেরানিরহাট থেকে ঢাকাগামী বাসে উঠলাম। নতুন ব্রি/জ এলাকায় এলে বাস থেকে তাকে আটক করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই চঞ্চল প্রকৃতির ছিলেন মইনুল। তিনি একবার অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন। সে দেশের নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। দেশে আসার পর সে /মা/দ/কে আ/স/ক্ত হয়ে পড়ে। তার অসংযত জীবনযাপনের কারণে তার পরিবার তাকে অপছন্দ করত। গ্রেফতারকৃত মইনুল ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাকে (মইনুল) ছোটবেলা থেকেই নজরদারিতে রাখলে এতটা উচ্ছৃঙ্খল হতো না। তাই শিশুর প্রতি নজর রাখুন। শিশু কি করে এবং কোথায় যায় সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
তবে নিহতের বড় মেয়ে শায়লা শারমিন নিপা দাবি করেন, ঐ অস্ত্রটি কখনোই আমার বাবার হতে পারে না। সে বিভিন্ন উচ্ছৃঙ্খল লোকের সাথে মেলামেশা করে। হয়তো তাদের কাছ থেকে এই অস্ত্র পাওয়া গেছে। আমি আমার মাকে হারিয়েছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। তিনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকি। কয়েক মাস আগে দেশে বেড়াতে এসেছি। আমার ভাই মইনু/ল মা/দ/ক/ ব্য/বসা করত। সে সব সময় পারিবারিক সম্পত্তির প্রতি লোভী থাকে। তবে তার বাবা-মা ভয় পেয়েছিলেন যে তিনি আরও সম্পত্তি পেলে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারেন। এ কারণে সম্পত্তি ভাগাভাগি হয়নি।
এদিকে টাকা-পয়সার জন্য নিজ মায়ের এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে ছেলে মাইনুলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নেটিজেনদের অনেকেই। যাতে পরবর্তীতে এমনটা করার সাহস আর কেউ না পায়।