বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি একপক্ষের বক্তব্য না শুনে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন। বিচার বিভাগের ইতিহাসে এটি একটি লজ্জাজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আপনি আদালতকে নষ্ট করেছেন।
সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলম বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা এ কথা বলেন।
প্রথমে বিএনপির সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে আপনার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি। আপনি একজন পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক। আমরা আপনার কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাব না। এ কারণে তারেক রহমানের কোনো মামলা আপনার আদালতে চলতে পারে না।
এ সময় বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামান বলেন, আপনাদের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের কথা শুনেছি।
আদালতে উপস্থিত ব্যারিস্টার কাজল তাৎক্ষণিকভাবে বিচারকের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেন, শুনানি করতে দেননি। আপনি ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন। এটা আপনি করতে পারেন না। কোর্টের পরিবেশকে আপনি নষ্ট করে দিচ্ছেন।
এ সময় বিএনপির আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের বক্তব্য আপনার শুনতে হবে। আমাদের বক্তব্য না নিয়ে কোনো অর্ডার পাস করতে পারেন না। আপনি কি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নীল নকশার রায় দেওয়ার জন্য বিচারকের আসনে বসেছেন?
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, আমাদের আদেশের বিরুদ্ধে আপনারা আপিল বিভাগে যেতে পারেন।
এ সময় তাকে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক বলে চেঁচামেচি শুরু করেন বিএনপির আইনজীবীরা। একপর্যায়ে আদালতে উপস্থিত আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন- আপনারা আদালতকে এভাবে চাপ সৃষ্টি করবেন না।
এ কথা বলতেই আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। এতে আদালতে অচলাবস্থা দেখা দিলে এক পর্যায়ে বিচারকরা আদালত কক্ষ ছেড়ে ব্যক্তিগত কক্ষে চলে যান। এতে বিচার বন্ধ হয়ে যায়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাইকোর্ট বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক সব বিবৃতি অনলাইন থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দেন।
আদেশের সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার উপস্থিত ছিলেন।
আদেশের সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।