কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার সঙ্গে চারটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পান সালমান শাহ। এগুলো হলো বাদল খন্দকারের ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, দিলীপ সোমের ‘মহামিলন’, শিবলী সাদিকের ‘মায়ের অধিকার’ এবং জাকির হোসেন রাজুর ‘জীবন সংসার’।
দুটি ছবিতে সালমানের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ববিতা এবং দুটি ছবিতে ভাবির ভূমিকায়। সালমানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘মহামিলন’ ছবির শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। পাহাড়ে একটি দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল। আমার হাতে পিস্তল ছিল। দৃশ্যটির শুটিংয়ে আমি, রাজীব ভাই (প্রয়াত অভিনেতা রাজীব আহমেদ), শারমিন, সালমান শাহ ও শাবনূর অংশ নিলাম।
সেদিন হোটেল থেকে আমার বসার চেয়ার স্পটে আনা হয়নি। তাই শুটিংয়ের মাঝে আমি সেটে আরেকটি চেয়ারে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। সালমান লক্ষ্য করে এবং আমাকে তার নিজের চেয়ারটি উপহার দেয়। আমি নিতে না চাইলেও সে জোর করে আমাকে দিয়েছিল। সেই চেয়ারটা আমার জন্য অনেকদিন সংরক্ষিত ছিল। আরও একটি ঘটনা আছে। এরপর মোবাইল ফোন প্রথম বাজারে আসে।
ওই মোবাইল ব্যবহার করতে পারতাম না। সালমানই আমাকে প্রথম শিখিয়েছিলেন কীভাবে একটি চিরকুটে মোবাইল ব্যবহার করতে হয়। আমি এখনও খুব যত্ন সহকারে তার নিজের হাতে লেখা সেই চিরকুটটি রেখেছি। মাঝে মাঝে সেই চিরকুটের মাঝে খুঁজে বেড়াই আমাদের হারিয়ে যাওয়া সালমানকে। সালমান আমাকে একটা কথা প্রায়ই বলতেন, ‘আপনি আমার আপন মা না হলেও আপনি আমার সুইট মা’।
সে আমাকে মা ছাড়া অন্য কিছুই বলে ডাকত না। এত বছর পরেও আমি তাকে নিয়ে কথা বলতে সত্যিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। সালমান অনেক ভালো অভিনেতা ছিলেন। পোশাক ও ফ্যাশনে এনেছিলেন নতুনত্ব। অভিনেতা হিসেবেও তিনি ছিলেন অনন্য।
সংলাপটা এমনভাবে বলত, এক্সপ্রেশনটা এমনভাবে দিত যে অভিনয় নাকি সত্য বোঝার উপায় থাকত না। তিনি পরিচালকের কাছ থেকে দৃশ্যটি বুঝে নিয়ে এমনভাবে সংলাপ দিতেন যে তার সহ-অভিনেতার পক্ষে পারফরম্যান্সের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার মতো একজন অভিনেতার অকাল মৃ/ত্যু সত্যিই আমাদের জন্য বেদনার, অনেক কষ্টের।