বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন নাজুক অবস্থার দিকে যাচ্ছে, যার কারনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। বিপাকে পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তাদের সামান্য আয়ে আগের চেয়ে অধিকাংশ পন্যদ্রব্য দ্বিগুণ দামে ক্রয় করতে হচ্ছে, যার কারণে সঞ্চয় জিরোতে পৌঁছেছে। এদিকে অনেক পরিবারকে ধার করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এবার এ বিষয় নিয়ে কথা বললেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, সীমান্তে বিএসএফের হ”/ত্যাকাণ্ড বাড়ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আপনি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছেন। আপনি অন্যের দয়ায় বেঁচে আছেন। আমি অনেক আগেই বলেছিলাম, শুধু বিদেশি সাহায্যে মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের আত্মরক্ষা শেখান যাতে তারা দায়িত্ব নিজেরা পালন করতে পারে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন. গণফোরাম ‘সংবিধানের ৫০ বছর ও নাগরিক চিন্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি। তবে সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। পুলিশ ভাই, সাবধানে থাকবেন। আপনারা অনেক দালালি করেছেন, সরকারের পক্ষে নানাভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু দেখতে পাচ্ছেন তো, কীভাবে আপনাদের চাকরি যাচ্ছে, আপনাদের অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আরও দিন যাবে, আরও চাকরি যাবে। তাই আপনারা জনগণের পক্ষে দাঁড়ান, কোনো দলের পক্ষে নয়।
তিনি বলেন, আজ উন্নয়নের এমন জোয়ার বইছে যে, নৌকা ডুবি ডুবি প্রায়। উন্নয়নের জোয়ারে নৌকা ডুবে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিরোধী দল সভা-সমাবেশ করতে পারবে। তাদের বাধা দেবেন না, তাদের চা খাওয়াবেন। এখন চায়ের বদলে জেলে পাঠাচ্ছেন। মামলা দিচ্ছেন। এভাবে কেউ কখনো জিতেনি। কোনো ফ্যাসিবাদী সরকার এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। তাই আমি আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) মনে করিয়ে দিতে চাই, দয়া করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বর্তমানে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। একজনের আয়ের ৩২ শতাংশ খরচ হয় চাল কিনতে। অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী তো আছেই। আজকের এই অবস্থায় উন্নয়ন কার হয়েছে বলবেন? একজন শ্রমিকের এক-তৃতীয়াংশ টাকা যদি চাল কিনতে যায়, তাহলে এই উন্নয়ন দিয়ে কী হবে?
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সতর্ক না হলে আমাদের কপালে আরো চরম দুর্ভোগ আছে। এই দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, গোয়ারতুমিকে ছেড়ে দিন। সবার সাথে আলাপে বসেন। সংলাপে যুক্ত হোন, সংঘাত নয়।
তিনি আরো যোগ করে বলেন, এ বিষয়ে যদি এখনই সতর্ক না হওয়া যায়, তাহলে আমাদের দেশের মানুষের কপালে চরম দুর্ভোগ রয়েছে। এই দুর্ভোগকে যাতে মানুষকে গ্রাস না করে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, আপনার গোয়ার্তুমিপনা বাদ দিন। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনায় বসেন। সংঘাত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন, সংলাপের বিকল্প নেই।