কিভাবে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় সেইটা দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি দলকে ধরে রাখার কাজটি যতটা সহজ মনে হয় ততটা সহজ না। এর জন্য দরকার বিচক্ষণ একজন নেতা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে প্রশ্ন করেছেন নেতৃত্বের যোগ্য কোনো নেতা কি নাই দলের মধ্যে।
বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো আর কোনো নেতা নেই কি-না প্রশ্ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনেই দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।
বুধবার (২২ জুন) সকাল ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) কাকে (নেতৃত্বে) নিয়ে নির্বাচন করবে বলতে পারবে? তাদের (বিএনপি) জন্য কান্নাকাটি করে কোনো লাভ নেই। তাদের মূলধন কত? বিএনপির যোগ্য নেতা নেই যিনি চেয়ারম্যান হতে পারেন? তাহলেই তো (এখনকার মতো) দুরবস্থা হয় না।
আওয়ামী লীগকে জনগণের দল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু আমাদের অন্য দলগুলোর কী হবে? তারা কোথায় জন্মেছিল?
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান একজন সামরিক শাসক। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত। ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় আসেন এবং তাকে সেনাপ্রধান নিযুক্ত করেন। এরপর তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। নিজে সেনাপ্রধান, স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খানের মতো।
তিনি বলেন, হ্যাঁ-না ভোটে (জিয়াউর রহমান) ক্ষমতায় ছিলেন। জনগণ জানে সেই ভোট কেমন ছিল। সেই জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন। এই গাছের বাকল ও বাকল নিয়ে ক্ষমতায় বসে একটি দল গড়েছে।
একইভাবে জাতীয় পার্টি গঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আরেক সামরিক শাসক (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) ক্ষমতায় এসে আরেকটি দল গঠন করেন। গঠিত হয় জাতীয় পার্টি। এভাবে সামরিক গোয়েন্দারা ক্ষমতায় বসে দল গঠন করেছে। তবে জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আমি সেই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এটা করতে গিয়ে আমি গ্রেনেড-বোমার আঘাত পেয়েছি। অনেক কষ্টের মধ্যেও আমি গণতন্ত্র চর্চা করতে পেরেছি এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজ এই অবস্থায় আছি।
বিএনপি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, একটি দল তখনই জনগণের আস্থা ও আস্থা অর্জন করে, যখন সে জানে ওই দল নির্বাচনে জয়ী হলে সরকারপ্রধান কে হবেন। কিন্তু সবাই এটা বিবেচনা করে। কিন্তু তারা (বিএনপি) কাকে (নেতা হিসেবে) দেখাবে? এতিমের টাকা মেরে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া)? আমি নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করেছি। নাকি তারা (পলাতক) গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, যারা (ভারপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারম্যান) তারেক রহমান) তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে ব্রিটিশ নাগরিক হয়েছেন (নেতা হিসেবে দেখানোর জন্য)?
তিনি বলেছিলেন যে তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিককে খুঁজছেন যিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। অনুসন্ধান করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাই এই (নেতৃত্ব) দিয়ে তারা কিভাবে নির্বাচন করবে সেটাই বড় বিষয়। চেয়ারম্যান কি পারবে, এমন যোগ্য নেতা আর কেউ নেই?
প্রসঙ্গত, একটি দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দরকার অভিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান একজন নেতার। নেতৃত্ব এমন একটি জিনিস যার উপর দলের ভবিষ্যত নির্ভর করে। সঠিভাবে নেতৃত্ব দিতে না পারলে অচিরেই একটি দল বিলীন হয়ে যায়। দলকে দক্ষ হাতে পরিচালনা করে যোগ্য নেতার প্রমাণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।