আপনাদের এমন প্রশ্ন অনেক বার শুনেছি : এবার আন্দোলন নিয়ে ধুয়ে ফখরুল

সম্প্রতি হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টির হয়েছে। বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের প্রভাবে কাটতে না কাটতে নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপক আকারে বেড়েছে যার কারনে সাধারন মানুষ দিশেহারা। সরকারে লাগামহীন লুটপাট ও দুর্নীতির কারনে জনগনের ওপর এই চাপ পড়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হটিয়ে জনগনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিএনপি শপথ নিয়েছে। গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করতে হবে বলে যা বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশছোঁয়া দাম, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও সিন্ডিকেশনের যাঁতাকলে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করতে হবে।

বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের কাছ থেকে এ ধরনের প্রশ্ন বহুবার শুনেছি, আপনার আন্দোলন বলতে আসলে কি বুঝান, এটা আমরা বুঝি না। আন্দোলন কি শুধুই হরতাল, অবরোধ এই ধরনের বিষয়? এগুলো শুধু আন্দোলন নয়।মানুষকে আস্তে আস্তে তৈরি করে রাস্তায় নামামোটাই আন্দোলন। মানুষ যখন রাজপথ দখল করবে, তখনই আন্দোলন অর্থবহ হয়ে দাঁড়াবে।

২৫ আগস্ট বাম দলের হরতালকে বিএনপি সমর্থন করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সব সময় ন্যায্য দাবির আন্দোলনকে সমর্থন করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার ও অব্যবস্থাপনা দেশকে সত্যিকার অর্থে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে বাকশালীরা। দেশের মানুষ আর বাগাড়ম্বর আর কাল্পনিক উন্নয়নের গল্প শুনতে চায় না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যত অন্যায় করেছে তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। সম্প্রতি জ্বালানির দাম বাড়িয়ে মানুষের বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের কিছু সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা জিম্মি হয়ে আছে। জনগণের কাছে এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই বিধায় তারা জনগণের কল্যাণের তোয়াক্কা না করে চরম নিষ্ঠুর ও নির্দয় হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই দুর্নীতিবাজ স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করে দেশে প্রকৃত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

রাজপথে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করার করার আহ্বান জানান ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহাসচিব নিত্যপণ্যের বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরে বলেন, ২০০৬ সালে এক কেজি মোটা চালের দাম ছিল গড়ে ১৫ টাকা। ২০২২ অর্থাৎ বর্তমানে মোটা চালের গড় দাম ৫৪ টাকা। দাম বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। ২০০৬ সালে প্রায় ৭ কেজি মোটা চাল ১০০ টাকায় কেনা যেত। বর্তমানে ২ কেজি মোটা চাল ১০০ টাকায় কেনা যায়। প্রায় ৫ কেজি কম চাল পাওয়া যায়। এরপরেও ২০০৬ সালের সমপরিমাণ ক্রয় সক্ষমতা অর্জন অসম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার জন্য এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কারন তাদের কোনো জবাদিহিতা নেই জনগনের কাছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তাদের নিজেদের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন জনগনের কথা চিন্তার করা সময় তাদের নেই।