জামালপুরে মসজিদের মাইক্রোফোনে ঘোষণা দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাকির হোসেন জেকে (৩৬) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। স্ত্রীকে ডিভোর্সের ঘোষণার একটি টিক টক ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করার পর রীতিমতো বিপাকে পড়ে যান তিনি। সমালোচনার মুখে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি নিজের মোবাইল ফোনও বন্ধ করে দেন জাকির।
গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে মেলান্দহ উপজেলার চরবানী পাকুরিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রংধুনিগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জাকির হোসেন জেকে ওই এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক ও স্বচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে জাকির হোসেন জেকে ও শিখা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান আছে.
বেশ কিছুদিন ধরে সংসারে তাঁদের বনিবনা হচ্ছিল না। ক্ষোভে জাকির স্ত্রী শিখা বেগমকে কয়েকবার মৌখিকভাবে তালাকের ঘোষণা দেন। পরে শিখার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন জাকির। এতেও শিখা বেগম বিয়েবিচ্ছেদ করতে রাজি হননি।
পরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। এর জের ধরে গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ির পাশের মসজিদের মাইক্রোফোনে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে একাধিকবার স্ত্রীকে তালাকের ঘোষণা দেন। মাইকে ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হননি জাকির। ওই দিনই জাকির তার স্ত্রীকে তালাকের বিষয়ে একটি ভিডিও মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে প্রচার করেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
এ ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মসজিদের মাইক্রোফোন ব্যবহার করে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে বলেও জানান এলাকাবাসী। জাকির তাঁর ভিডিওটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছেন। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
জাকিরের স্ত্রী শিখা বেগম জানান, বিভিন্ন সময় জাকির তাকে জোরপূর্বক অসামাজিক কাজে লিপ্ত করতেন। বাধা দিলে নির্যাতনের শিকার হতেন। যে অভিযোগে তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। শিখা বেগমের অভিযোগ, সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্যাতন সহ্য করেছেন।
শিখা বেগম আরো জানান, তালাকের বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। ১০ বছর বিয়ে হলেও নির্যাতনের কারণে স্বামীর বাড়িতে টিকতে পারেননি তিনি।