হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ২০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় ও ৫৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের তিন সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত সভায় সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠন পুনর্গঠন এবং নতুন কমিটি গঠন ও কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া কারাগারে আটক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নামার ঘোষণা আসতে পারে। তবে এই মুহূর্তে আন্দোলন নিয়ে সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিভক্তি আছে।
বুধবার সংগঠনটির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদ্রিস গতকাল বলেছেন, আমাদের ২০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কিছু সদস্য অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ঢাকা শহরে একটি কমিটি আছে। চট্টগ্রামে একটি আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে।
এছাড়া জেলা ও উপজেলাসহ অন্যান্য মহানগরে সংগঠন কমিটি গঠন করা হবে। আগামীকাল (আজ) বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে এবং চলতি বছরের মধ্যে সংগঠন গোছানোর প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।
হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা জাকারিয়া নোমান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের কোনো মামলা এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রথম বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সংগঠনের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গত ৩১ আগস্ট হেফাজতে থাকা ২০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর কমিটিতে যোগ দেওয়ার জন্য অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মামুনুল হক, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মুনির হোসেন কাশেমী, হেফাজতের আগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য নূর হোসেন নূরানীসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ৩০ নেতাকর্মীকে আদালতে আনার কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাচনকে সামনে রেখে হেফাজতের একাধিক নেতা জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনের মধ্যে একটি দল সবসময় হেফাজত ইসলামকে মাঠে নামাতে তৎপর হবে। অপরপক্ষ আন্দোলনের বিরুদ্ধে।
নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিরোধে রয়েছেন। আবার কারাগারে থাকা মামুনুল হকসহ সংগঠনের সাবেক নেতাকর্মীদের মধ্যে হেফাজতের নেতারা তাদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন করার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা জাকারিয়া নোমান বলেন, হেফাজেত ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। বৈঠকে মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে হেফাজতের নাম ব্যবহার করে কেউ নির্বাচন করবে না।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দু-একজন অনুসারী ছাড়া আর কাউকে রাখা হয়নি। এতে অনুগামীরা অসন্তুষ্ট।