জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারের আঘাতে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের যুবক মো. সাইদুল ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। দুর্ভাগ্যক্রমে, তার এই কঠিন সময়ে স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে একমাত্র দেড় বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে সাইদুল জানান, দুঃসহ অভাব-অনটনের মাঝে জীবনযাপন করছেন তিনি। আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়ে বাম চোখ পুরোপুরি হারানোর পরও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা পাননি। চিকিৎসার অভাবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এখনো স্প্লিন্টার বহন করছেন।
সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে যোগদান করার সময় গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থেকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্ধ প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার অপসারণ করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আরও এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখে অপারেশন করা হয়।
বর্তমানে বেকার অবস্থায় মা-বাবার কাছে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাইদুল। তার দাবি, সরকারি সহায়তা পেলে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান জানিয়েছেন, সাইদুল যদি আবেদন করেন, তাহলে সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাকে সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।