ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস যিনি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর সেটা এখনো চলমান রয়েছে। এদিকে তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে যে মামলা হয়েছিল সেটা বাতিল চেয়ে ইউনুস আপিল করলে সেটা খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এরপরে তার মামলার বাতিল বিষয়টি বলবৎ থাকে যার ফলে মামলাটি চলমান থাকবে, এমনটাই জানা গেছে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে চেম্বার আদালতে শুনানি শেষে আবেদনটি খারিজ করা হয়। ফলে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে মামলা চলবে। এর আগে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
এদিকে গত বুধবার (১৭ আগস্ট) শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা মর্মে জারি করা রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট বিভাগ। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ বিষয়ে আগের রুলের ওপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রুল খারিজ করেন।
ফলে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রম আদালতে আনা মামলায় কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। শুনানিতে ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী তবে আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাব। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অংশ নিতে আদালতে আবেদন করা হয়। এছাড়া দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির বিষয়ে আপিল বিভাগের আদেশও উপস্থাপন করা হয়।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্ট বিভাগে স্থগিত ইউনূসের মামলা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এখানে কলকারখানা অধিদফতরের পক্ষে যিনি মামলাটি দায়ের করেছিলেন সেই রুল থাকা অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। এখন মামলার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য আবেদন করার অনুমতি চেয়েছি। আর আপিল বিভাগ দুই মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়ায় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সেই আদেশের কপি আমরা আদালতে জমা দিয়েছি।
আদালত হলফনামা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। সে অনুযায়ীই রুল শোনানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে বাদী হয়েছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। ইউনূসসহ চারজনের নামে তিনি এ মামলা করেন। ইউনূসের এমডি ছাড়াও মামলায় আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মোঃ শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়।
মামলায় শ্রম আইনের ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় শ্রম কল্যাণ ফাউন্ডেশনে সুনির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনের শুনানি শেষে গত ১৩ জুন মামলাটি বাতিলের রুল জারি করে দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করার বিষয়েও অভিযোগ তোলা হয়। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি এলে তিনি তাদের সাথে একটি বৈঠক করেন যেখানে এই অর্থায়ন বাতিলের জন্য তিনি চেষ্টা করেন। এ তার বিরুদ্ধে করা বেশ কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।