প্রেম ভালোবাসাকে অনেক পিতা-মাতা সমর্থন করেন না। ভালোবাসার টানে মানুষ পিতা-মাতাকে অবজ্ঞা করে প্রেমিকার হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও নতুন নয়। সারাবিশ্বে এমন অনেক ঘটনা মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত। প্রেমের ভালোবাসার অনেক ঘটনা রয়েছে যে গল্প সিনেমাকেও হার মানায়। এমন একটি ঘটনায় প্রেমিক প্রেমিকাকে আদালতের দ্বারস্থ ও হতে হয়েছে। এই ঘটনায় বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব ছিলেন রাজা শেখর ( Raja Shekhar ) মন্থার।
সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের ( East Burdwan ) কাটোয়া থানা এলাকার বাসিন্দা রহমাতুন্নেসা খাতুন এবং মুর্শিদাবাদ ( Murshidabad ) জেলার বাসিন্দা আশিক আলী মুসলিম শরিয়ত-রেজিস্ট্রি অনুসারে ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে বিয়ে করেন। ছেলের পরিবার বিয়ে মেনে নিলেও মেয়েটির পরিবার শুরু থেকেই আপত্তি জানায়। তা উপেক্ষা করে সুখে সংসার করছিলেন রহমাতুন্নেসা-আশিক। কিন্তু নবদম্পতির সুখী পরিবারের পাশের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। মেয়েটির পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। দুজনকে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
আশিক তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য ১৮ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আশিকের আইনজীবী জ্যোতি প্রকাশ চট্টোপাধ্যায় জানান, গত কয়েক মাস ধরে রহমাতুন্নেসা খাতুনকে ক্রমাগত মানসিক ও শারীরিক নি’’/র্যাতন করা হচ্ছে। যাতে তিনি তার প্রেমিক ও স্বামী আশিক আলীর কাছে ফিরে যেতে না পারে। কিন্তু রহমাতুন্নেসার মন থেকে আশিককে কেড়ে নিতে পারেননি তার বাবা মা।
আদালতের নির্দেশে বুধবার কাটোয়া পুলিশ ( police ) রহমাতুন্নেসাকে হাজির করে। আইনজীবীর সঙ্গে আশিক আলীও ( Ashiq Ali ) উপস্থিত ছিলেন। ভরা আদালত কক্ষে রহমাতুন্নেসা বিচারকের কাছে জানতে চান তিনি তার স্বামীকে ফিরে পেতে চান কিনা। প্রথমে প্রশ্নের উত্তর দিতে ইতস্তত করেন রহমাতুন্নেসা। রহমাতুন্নেসাকে আশ্বস্ত করেন বিচারক। এরপর রহমাতুন্নেসা স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার আবেদন জানান। সঙ্গে সঙ্গে আদালত কক্ষে চার হাত আবার এক করার নির্দেশ দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, রহমাতুন্নেসা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আদালতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।এরপর হাইকোর্ট মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পর স্যালাইনের পানি দেওয়া হয় তাকে ।বর আশিক আলী তার হাতমুখও ধুইয়েও দেন ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন। আদালতে স্বামী-স্ত্রীর এমন ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হন বিচারপতিসহ আদালতে উপস্থিত সকলেই। এক পর্যায়ে বিচারপতি মেয়ের বাবা মাকে কটু কথা শুনায়। আশিক ও রহমাতুন্নেসাকে নতুন করে সংসার শুরু করার নির্দেশ দেন বিচারপতি মন্থা। আদালতে উপস্থিত লোকজনসহ অনেকেই তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।