নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা নারীর সাথে গর্হিত কাজ করার মামলার দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহনের দিনে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে এজলাসে নীরব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তিনি ঐ সময়ে কোনো ধরনের উচ্চবাচ্য করেননি। তাকে যে সময় আদালতের ভেতরে এবং বাইরে নেওয়া হয় সেই সময়ও তিনি স্বাভাবিক ছিলেন।
তবে তার অনুসারীদের আদালতপাড়ার বাইরে অবস্থান করতে দেখা যায়। তার একজন অনুসারী আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন। এ সময় তাকে মামুনুল হক কিছু বলতে চেষ্টা করেন কিন্তু পুলিশের তৎপরতার কারণে বলতে পারেননি। সেই সময় স্লোগান দেওয়া ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আদালতে উপস্থিত আইনজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এমন ধরনের তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করা হয়। আদালতের প্রবেশ ফটকে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ ও চেক করে প্রবেশ করানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহি’নীর সদস্যদের টহল বাড়ানো হয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয় মামুনুল হককে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শি’/শু নির্যা’/তন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষগ্রহণ শুরু হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহি’নীর সদস্যদের নজরদারি বাড়ানো হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আদালত ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
দুপর ২টা পর্যন্ত চলে সাক্ষ্যগ্রহণ। এসময়ে কিছু অনুসারী বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আদালত ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মানুনুল হককে নিয়ে যাওয়ার সময় আদালত ভবনের ভেতরেই একজন স্লোগান দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলি’শ তাকে সরিয়ে দেয়। একইসঙ্গে মামুনুল হকও কিছু বলতে চাইলে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিবুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ মামুনুলের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন অফিসার নাজমুল ইসলাম অনিক ও আনসার গার্ড রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৫ জানুযারি দিন ধার্য করেছেন। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। তার আগে গত ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা গর্হিত কাজ সংশ্লিষ্ট মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সাথে সময় কাটাচ্ছিলেন মামুনুল হক। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে হাজির হয়ে মামুনুল হককে ঘিরে ফেলে নানা ধরনের প্রশ্ন করতে শুরু করে। পরবর্তীতে স্থানীয় হেফাজত কর্মী-সমর্থকরা রিসোর্টে গিয়ে ভাংচুর করতে শুরু করে এবং তাকে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর গত ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গর্হিত কাজ সংশ্লিষ্ট মামলা করেন তার সাথে থাকা ওই নারী। মামুনুল হক মামলা করা ওই নারীকে তার ২য় স্ত্রী হিসেবে দাবি করে আসছেন।