স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট-১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আসনটির নৌকার প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রাসেল হাসানের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেন। জবাবে এ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আজ আমার খুব আনন্দের দিন। কারণ আমি জানতে পারলাম, সিলেট- ১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাদের আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। তাই আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন,
৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ দলকে টিকিয়ে রাখতে, নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শকে ধারণ করতে অনেক নির্যাতনে শিকার হয়েছেন, জেল খেটেছেন, অনেক কষ্ট করেছেন। কিন্তু কোনো কারণে কখনো নৌকার বিপক্ষে কাজ করেননি। বরং নৌকাকে মজবুত ভিত্তির ওপর জয়ী করতে তিনি সারাজীবন কাজ করেছেন।
তবে এবারের নির্বাচনে সব দল ও মতের মানুষকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র দল হিসেবে দাঁড়াতে চাইলে দল তাকে বাধা দেবে না। সে বিবেচনায় সিলেট-১ আসনে আমরা সাতজন প্রার্থী। এদের মধ্যে ছয়জনই বিভিন্ন দলের। আর স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছেন শুধু অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। কিন্তু আজ জানতে পারলাম, তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। আমি একটু বলতে চাই, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের মতো একজন আত্মত্যাগী মানুষ, যিনি সারাজীবন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, তিনি কখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন বলে আমি বিশ্বাস করিনি। আমার সেই বিশ্বাস বাস্তব হলো। আমি সিরাজ সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই’, যোগ করেন আব্দুল মোমেন।
মন্ত্রী বলেন,
দুই ভাই মিলে নৌকাকে জেতাতে একসঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে চেষ্টা করব। ৫ বছর আগে আমি যখন নির্বাচন করি, তখন তিনি সব সময় আমাকে সহযোগিতা করেছেন। এবারও তিনি সব সময় আমার সঙ্গে থাকবেন বলে বিশ্বাস করি। এখানে একটা কথা বলি, কিছুদিন আগে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলও স্বেচ্ছায় সিলেট -১ আসনে নির্বাচন করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন। আমি তার প্রতিও কৃতজ্ঞ। কারণ তিনিও স্বেচ্ছায় আমার কারণে নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন। এটি আমার জন্য বড় রকমের একটি জয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার ১৭ ডিসেম্বর সিলেটে আসার কথা ছিল। কিন্তু কুয়েতের আমির মারা যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমাকে তার জানাজায় যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেজন্য আমি সিলেটে নেই। তবে সিলেটে যখনই আসব, সিরাজ সাহেব, আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করব, কৃতজ্ঞতা জানাব এবং ধন্যবাদ জানাব।’