সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৌতিক অঙ্গনে আজ সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে মরদেহ জানাজার জন্য জাতীয় ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েন সকলেই সেই সাথে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
ডেপুটি স্পিকারের চাচাতো বোন এলিজা আক্তার জাতীয় ঈদগাহে কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার বাবা মারা যান। তিনি (ফজলে রাব্বী মিয়া) আমাকে পিতৃস্নেহে বড় করেছেন। আমার লেখাপড়া, চাকরি, বিয়ে সব দায়িত্ব তিনি বাবার মতো নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। আজ তাকে হারানো আমার বাবাকে হারানোর মতো।
তিনি বললেন, ‘তার মতো মানুষ নেই। তিনি আমাদের জেলার সব ধরনের মানুষকে ভালোবাসতেন। তাকে কেউ প্রথমে সালাম দিতে পারত না, ছোট-বড় সবার আগে তিনি সালাম দিতেন। কেউ বিপদে পড়লে সবার আগে পাশে দাঁড়াতেন। তার মতো নেতা আমাদের এলাকায় আর আসবে না। তাকে হারিয়ে আমরা গাইবান্ধাবাসী অভিভাবকহীন হয়ে গেলাম ।
ফজলে রাব্বী মিয়ার ফুফাতো বোন ডেইজি আক্তার বলেন, ধর্ম নির্বিশেষে যে কোনো ধর্মের মানুষ তার কাছে সাহায্যের জন্য আসতে দ্বিধা করবে না। নিজের বাড়িতেই তাদের খাওয়াতেন।
তিনি বলেন, “আমার মামাতো ভাই আমাকে চাকরি দিয়েছেন, আমার ছেলে-মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন, আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, এমপি হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। তার মতো মানুষ নেই। এমন ভালো মানুষ হবে কিনা সন্দেহ আছে। পৃথিবীতে আবার জন্ম।
সোমবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় নেতৃত্ব দেন সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম আবু সালেহ। সলিমুল্লাহ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী ড. রেজাউল করিম, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
জানাজার আগে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে তার স্মরণে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির।
জানাজা শেষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ফজলে রাব্বী মিয়ার কফিনে শ্রদ্ধা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২২ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে (নিউইয়র্ক সময় বিকেল ৪টা) ফজলে রাব্বী মিয়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া না ফেরার দেশে চলে গেলেন। মুলত তিনি শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্টের একটি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল সেখানেই শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ফয়জার রহমান এবং মায়ের নাম হামিদুন নেছা।