প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়েছে।
ফখরুলের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ সময় আদালত আইনজীবীকে বলেন, আগে জামিন শুনানির এতো তাড়া ছিল, এখন নেই কেন? পরে আদালত শুনানির জন্য নির্বাচনের দিন (৭ জানুয়ারি) ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর মামলাটি শুনানি কার্যতালিকার ১ নম্বরে ছিল। ওই দিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী ১৮ ডিসেম্বর শুনানির জন্য আবেদন করলে আদালত বলেন, বন্ধের পর শুনানি হবে। এখন কোনোভাবে সম্ভব না। এরপরে আজ বুধবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
জানা গেছে, ১ থেকে ৭ জানুয়ারি বিএনপির আদালত বর্জন কর্মসূচি চলমান থাকায় জামিন শুনানিতে বিএনপির আইনজীবীরা অংশ নেননি।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন বিষয়ে রুলের শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
সেদিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এসময় আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান খান, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও অ্যাডভোকেট সগির হোসেন লিওন।অন্যদিকে, রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম রাফেল।
গত ৩ ডিসেম্বর ২৮ অক্টোবরের সাধারণ সভায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় মির্জা ফখরুলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিবের জামিন নামঞ্জুর করেন নিম্ন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের এই আদেশ দেন।
গত ২ নভেম্বর একই আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সাধারণ সভা চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল মো. (অব.) আলতাফ। হোসেন চৌধুরী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।
পরদিন ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মির্জা ফখরুলকে গুলশানের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।