ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাটি করেছিলেন করপোরেট আইডিয়াসের মার্কেটিং অফিসার মো. শাহজাহান। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের দূরসম্পর্কের আত্মীয় তিনি। শাহজাহান তার চা দোকানদার বন্ধু হৃদয়কে তার পরিকল্পনার কথা জানান। তারা আরেক বন্ধু রাসেলের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে পুলিশ সদস্যদের দিয়ে কাজ করলে কোন সমস্যা হবে না। এরপর হৃদয় তার বন্ধু পুলিশ কনস্টেবল মাহাবুব আলীর সাথে পরামর্শ করে ডাকাতিটি চালায়। পারিবারিক সমস্যার কারণে এর আগেও একবার সাসপেন্ড হয়েছিলেন মাহাবুব। সেই ধাক্কা সামলাতে পারলেও চাকরি হারান তিনি।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ডাকাতির আগে শাহজাহান ও তার সহযোগীরা নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রথমত, মোট পরিমাণ হবে দুটি অংশ। কনস্টেবল মাহাবুব আলী ও কনস্টেবল আসিফ ইকবাল এক ভাগ পাবেন এবং বাকিটা শাহজাহান ও তার সহযোগীরা নেবেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন জানান, ডাকাতির মামলায় দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের নামে মামলাও হয়েছে। বর্তমানে রিমান্ডে আছে। তিনি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যের নামে কোনো ফৌজদারি মামলা হলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। তাদের আলাদা করে বরখাস্ত করার কিছু নেই। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে আইএফআইসি ব্যাংকের পল্টন শাখা থেকে ২০ লাখ ৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরে দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় ডাকাতির মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কর্পোরেট আইডিয়াসের মার্কেটিং অফিসার কনস্টেবল মাহাবুব আলী ও কনস্টেবল আসিফ ইকবাল। শাহজাহান, দোকানদার হৃদিয়া ও তার বন্ধু রাসেল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সদস্য মাহাবুব আলীর বাড়ি দিনাজপুর। তিনি সাত বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন। এর মধ্যে পারিবারিক সমস্যার কারণে তাকে একবার বরখাস্ত করা হয়েছিল। আর আসিফ ইকবালের বাড়ি নওগাঁ। পাঁচ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন। এখন পর্যন্ত তার নামে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড পাওয়া যায়নি। তারা ডিএমপিতে রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত ছিলেন। আসিফ ইকবাল মাহাবুব আলীর মাধ্যমে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, গতকাল দুই পুলিশসহ পাঁচ আসামিকে আদালতে তোলা হয়েছে। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মেহরা মাহাবুবের আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কর্পোরেট আইডিয়াসের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, শাহজাহান তার কোম্পানিতে ১০ বছর ধরে কাজ করছেন। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ ছিল না। এ ছাড়া তার কোনো বদ অভ্যাস নেই। ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর শাহজাহানের পরিবারের সদস্যরা বিপর্যস্ত। কার পরামর্শে শাহজাহান এমন কাজ করেছেন বুঝতে পারছেন না আব্দুল্লাহ আল মামুন।