আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় পার্টি তাদের দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দলটি ৩০০ নির্বাচনী আসনেই প্রার্থিতা দিতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিষয়টি অনেকটা ঢেকেই দলীয় কাজ করে চলেছেন দলটির নেতারা। এদিকে জাতীয় পর্টির তরফ থেকে মাঝে মাঝে জোট ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও সংসদ সদস্য জিএম কাদের।
তিনি বলেছেন, আমরা জোট করব কি করব না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা এসব সিদ্ধান্ত নেব। আমরা এখনও জানি না কী করব, শেষ পর্যন্ত কী হবে।
তিনি বলেন, “এখন আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩০০ আসনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেভাবেই প্রার্থী তৈরি করছি। আমাদের দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। তবে আগামী দিনের পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার বিকেলে রংপুর নগরীর দর্শনা গ্রামের বাড়িতে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক চুন্নুসহ কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জিএম কাদের।
জিএম কাদের ইভিএমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলে আসছি ইভিএমে কারচুপি হতে পারে। ইভিএমের মাধ্যমে সরকারি দল নানাভাবে প্রভাব বিস্তার ও ফলাফল চুরি করতে পারে। সরকারী দল এখন সাধারণ নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করছে, তারা ক্ষমতা দেখায় কারণ সবকিছুই সরকারি দলের অধীনে। রেজাল্ট নিজের পক্ষে নিয়ে যেতে পারে।এসব কথা আমরা সব সময় বলে আসছি। আমরা আগে যে কথাগুলি বলেছিলাম তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ইভিএমে সুষ্ঠু ভোট হয় না, এবার নতুন নির্বাচন কমিশনার নিজেই বলেছেন। গাইবান্ধা উপনির্বাচনে সেটা প্রমাণিত হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এককভাবে আমাদের যে রাজনৈতিক শক্তি ও অবস্থান আছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমাদের একটি অতীত আছে। অতীতে আমরা যে ধরনের সুশাসন দিয়েছি, কোনো সরকারই তা দিতে পারেনি। ভবিষ্যতে পারবেও না। আমরা এখন সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে আসছি। আমরা এভাবে নিজেদের শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেব।
দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার হুম”কি-ধম’কির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, কে কী বলছে সে বিষয়ে আমি পাত্তা দিই না। যারা এসব কথা বলছে, তারা আজেবাজে কথা বলছে। আমি মনে করি এসব বিষয়ে মতামত দেওয়া ঠিক হবে না। যারা জাতীয় পার্টির নাম ব্যবহার করছে তাদের নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মো. সম্পাদক এস এম ইয়াসির। , জেলা আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু, সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এ সম্মেলনে যোগ দিতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং থানা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে হাজির হন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান উপস্থিত নেতাকর্মীদের বলেন, জাতীয় পার্টি জনগণের গ্রহণযোগ্য সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে এবং আগামীতে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে দেশের জনগণের চাওয়া পাওয়াকে প্রাধান্য দেয়া হবে।