Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আওয়ামী লীগের পাঁচবারের এমপি মোসলেমকে রুখে দিতে এবার মাঠে নেমেছে তাঁরই দুই ছেলে-মেয়ে

আওয়ামী লীগের পাঁচবারের এমপি মোসলেমকে রুখে দিতে এবার মাঠে নেমেছে তাঁরই দুই ছেলে-মেয়ে

মুসলিম উদ্দিন আহমেদ (৮৫) ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে পাঁচবার সংসদ সদস্য (এমপি) হয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি টানা তিনবার জয়ী হয়েছেন। তিনি ১২ তম জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী। তবে মুসলিম ঠেকাতে তার দুই ছেলে-মেয়ে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণায় খুব একটা দেখা না গেলেও তার ছেলে-মেয়েরা মনোনয়নের জন্য আলাদাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

মোছলেমের ছেলে ইমদাদুল হক সেলিম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর মেয়ে সেলিমা বেগম সালমা শামসুন নাহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছেন। বর্তমানে দেশেই অবস্থান করছেন। রাজনীতিতে মুসলিম পরিবারগুলোতে এমন বিভক্তির মধ্যেই মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা। দল অংশ নিলে কেউ কেউ বিএনপির প্রার্থী হতে চান। জাসদ, জাতীয় পার্টির নেতারাও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন।

পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক অঙ্গনে এসে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণ সম্পর্কে মুসলিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল, তাই ছেলে-মেয়েরা যোগ্য বলে মনোনয়ন চাইতে পারেন। কিন্তু জনপ্রিয়তার বিচারে নবাগতরাও তার ধারে কাছে নেই।

নিজে প্রার্থী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে মোসলেম উদ্দিন বলেন, তিনি ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে কর্মক্ষমতা হারানোর কথা বলে ইমদাদুল ২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সভাপতির পদ ছিনিয়ে নেন।

এখন আবার ছেলে মেয়েরা প্রার্থী। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই জানেন তিনি (মুসলিম) কর্মক্ষমতা হারাননি, সুস্থ আছেন।

এ বিষয়ে ইমদাদুল হক সেলিম বলেন, বাবার পরিচয়ে নয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সভাপতি হয়েছেন। এবার বাবার পাশাপাশি তিনিও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। কারণ, তিনিই উপজেলা আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।

তবে সেলিমা বেগম জানান, তিনি ১৯৮৮ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর ধরে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেছেন এলাকার নারীদের কাছে। অধিকার আছে বলেই তিনি এখন মনোনয়ন চাইছেন।

সম্প্রতি ফুলবাড়িয়া উপজেলা শহরের আশপাশে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমর্থনে ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ড টাঙাতে দেখা গেছে সমর্থকদের। মুসলিম পরিবারের সদস্য ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মালেক সরকার ও সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম মোস্তফা তপন প্রচারণা চালাচ্ছেন। .

হারুন অর রশিদ তৃণমূলে তার গ্রহণযোগ্যতার কথা উল্লেখ করে মনোনয়ন চান। আর আবদুল মালেক সরকার দীর্ঘদিন একই পরিবারের মধ্যে ক্ষমতার চর্চা দেখতে চায় না। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য ও তার ছেলে-মেয়েরা ফুলবাড়িয়ায় রাজনীতির নামে ব্যবসা শুরু করেছে। এক ঘরে এত প্রার্থী, এটা হাস্যকর। দলের জন্যও বিব্রতকর। আশা করি দল কোনো সমস্যা ছাড়াই স্বচ্ছ ব্যক্তিকে নির্বাচন করবে।

আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিতেও রয়েছে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারী দল নির্বাচনে অংশ নিলে ফুলবাড়িয়া উপজেলা আহ্বায়ক আকতারুল আলম ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমান ও যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল করিম সরকার প্রার্থীতা চাইবেন।

আক্তারুল আলম ফারুক বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে আসবে না। তার দল নির্বাচনে এলে এবং তিনি মনোনয়ন পেলে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ ধানের শীষে ভোট দেবেন।

এদিকে নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হলে এ আসনে প্রার্থী হতে চান জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও জাতীয় পার্টির (জাপা) তিন নেতা। জাসদের (আইএনইউ) পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু। আর জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আহ্বায়ক কে আর ইসলাম, জিএম কাদেরের ঘনিষ্ঠ নেতা মাহফুজুর রহমান বাবুল।

জাসদের শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি সংকটকে কাজে লাগাতে চান। নৌকাকে বিজয়ী করতে হলে জোটের মাধ্যমে জাসদের ওপর নির্ভর করতে হবে। উপজেলার ১২৬টি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষও তাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়।

জাপার কে আর ইসলাম বলেন, তাকে মহাজোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে ফুলবাড়িয়া হবে স্বচ্ছ রাজনীতির দৃষ্টান্ত। প্রসঙ্গত, ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ-৬ আসন। মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৬ হাজার ১২ জন। ১৯৭০ সাল থেকে এ আসনে আওয়ামী লীগ ছয়বার এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দুইবার জয়লাভ করেছে।

About Zahid Hasan

Check Also

থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে উল্টো কট ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনের সাবেক আলোচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরকে কাঁঠালিয়া থানার একটি মামলায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *