অপরাধ করে কেউ কোনোদিন রেহাই পায়নি আর পাবেও না। সরকার অপরাধ দমনে বদ্ধপরিকর। অপরাধের শাস্তি একদিন না একদিন পেতেই হবে। মানুষ বুদ্ধিবিচারসম্পন্ন প্রাণী। মানুষ হয়ে যদি করে গর্হিত কাজ তাহলে তার থেকে লজ্জার বিষয় আর কি হতে পারে। সম্প্রতি জানা গেল আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ প্রাণনাশের মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদুর রহমান খান মুক্তি থাকছেন কারাগারেই।
আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ প্রাণনাশের মামলার আসামি টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদুর রহমান খান মুক্তির জামিন স্থগিত করে চেম্বার জজ আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। একই সঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে তার জামিনের রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৩ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল ফারুক আহমেদ প্রাণনাশের মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। গত ২৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।
গত ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট শহিদুর রহমান খানকে জামিন দেন। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সরওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপর জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যা আজ আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ জামিন মঞ্জুর করেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলার রায়ের দিন তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন।
২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ কোলেজপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদরে মামলা করেন। পরে ২০১৪ সালের আগস্টে রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা।
তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দেন তারা। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপন করে।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমানুর রহমান খান ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তার অপর দুই ভাই আত্মগোপনে রয়েছে।
উল্লেখ্য, একজনের উপর আর একজন মানুষের মান অভিমান বা রাগ থাকতেই পারে তাই বলে তার প্রতিশোধ নইটে যেয়ে একেবারে প্রাণনাশ করে ফলতে হবে এমনটা সত্যিই দুঃখজনক একটি বিষয়।