বাংলাদেশের রাজনীতির সব থেকে বড় দলের নাম আওয়ামীলীগ। আর এই আওয়ামীলীগই গেলো এক দশকের বেশি সময় ধরে রয়েছে ক্ষমতায়। তবে এই বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার কারণেই হয়তো দলের মধ্যে তৈরী হয়েছে নানা ধরনের কোন্দ্রল আর শত্রু। এবার এ নিয়েই একটি বিশ্লেষণাত্মক লেখনী লিখেছেন মঞ্জুর কাদের। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
‘রাজনীতিতে কেউ কারো শত্রু নয়’
মুক্তিযোদ্ধারা আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহায়তা পেয়েছিলেন। স্বাধীন দেশে গণতন্ত্রের জন্য লড়াকুদের বিদেশীরা সমর্থন দিয়েছেন, এখনো দিচ্ছেন।
পাকিস্তানের সময় ১৯৪৭ সাল থেকেই বাঙালিরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল কারণ পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী জনগণের ম্যান্ডেট মানেনি।
জনগণের সিদ্ধান্ত মানলে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, আওয়ামী লীগ থাকতো ক্ষমতায়।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। এই মূল জায়গা থেকে সরে গিয়ে আওয়ামী লীগকে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো সাধারণ নির্বাচন করতে হয়েছে।
অন্য দলগুলোর উপর দোষ চাপানোর কৌশলে আওয়ামী লীগ কতটুকু লাভবান হয়েছে তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের মত বিরাট রাজনৈতিক দলের জন্য বাইরের শত্রু প্রোয়োজন হয় না। ইতিহাস তাই বলে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বেশিদিন সরকার পরিচালনা করার সুযোগ পাননি বঙ্গবন্ধু।
মুক্তিযুদ্ধস্নাত বাংলাদেশে প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধুর চারপাশ ঘিরে রইল ভিন্ন মানসিকতার নেতাকর্মী অনেকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পোশাক গা থেকে খুলে ফেলেন তারা। শেষ পর্যন্ত বিরক্ত-বিক্ষুব্ধ বঙ্গবন্ধু এদের ‘চাটার দল’ বলতে বাধ্য হয়েছিলেন। ‘চোরের খনি’ পাওয়ার কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
দেশের স্বার্থে বাস্তব বিশ্লেষণ করার সময় এসেছে আওয়ামী লীগের।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে হিংসা প্রতিহিংসা বেশী দিন টিকে না। এক ইউনিটের দেশটিতে সবাই এক ভাষায় কথা বলে। রাজনীতিবিদরা পরস্পর হয় আত্নীয়তার সম্পর্কে আবদ্ধ নয়তো বন্ধুত্বের সম্পর্কে।
রাজনীতিবিদরা একে অপরের শত্রু নয়। রাজনীতিবিদদের শত্রু হওয়া উচিত দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, খুনী, প্রতারক এবং ভন্ড ব্যক্তিবর্গ।
যাদের অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই আফসোস করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, সামনে ঘনিয়ে আসছে জাতীয় নির্বাচনের সময়।আর এই কারণেই অন্য দলের মত আওয়ামীলীগ বেশ কিছু হিসাব কিতাব কষে নিচ্ছে। তবে অনেকেরই ধারণা এবারের নির্বাচন হবে না আগের মত এত সহজ।