নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম একটি আলোচিত মুখ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলকে নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করে মন্তব্য তিনি করেন সব সময় যখনই অরাজকতা তার সামনে পড়ে। যেন কাউকেই ছাড় দেওয়া যাবে না সে যে দলেরই হোক, অপরাধী তো অপরাধী। সম্প্রতি একটি ভাষণে নিজের মনের কিছু কিছু ক্ষোভ তুলে ধরেন সেখানে। নিন্দা করতে ছাড়েনি বিএনপি-আওয়ামীলীগ দু’দলের কোনোটাকেই। তাইতো এখন আলোচনার শীর্ষে মান্না।
নাগরিক ঐক্য পার্টির আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ১৯৮৯ সালে আসাদের মৃত্যুতে লাখো মানুষ জড়ো হয়েছিল, এখনো মানুষ মরছে, এখন আবার জেগে উঠছে না কেন? এরপর থেকে অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মী থাকলেও কেন অভ্যুত্থান হচ্ছে না।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী শহীদ আসাদের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তোফায়েল আহমেদকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান মান বলেন, যে মানুষটি সব অভ্যুত্থানের নায়ক ছিলেন তাকে আজ দেখা যাচ্ছে না। তিনি আজ কি করছেন আমরা জানি না। তাই আমরা ইতিহাসকে গিলে খাচ্ছি। আমরা সেই ইতিহাসগুলি তৈরি করার চেষ্টা করছি যেগুলির অস্তিত্ব ছিল না। আমরা যতটা সম্ভব মিথ্যা ইতিহাস তৈরি করার চেষ্টা করছি যাতে জাতি বিভ্রান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা বা সরকারের পদত্যাগ চায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন ড. উপাচার্য পদত্যাগ করছেন না কেন? ভিসি বলেছেন, সরকার আমাকে বললে আমি পদত্যাগ করতে পারি। অর্থাৎ সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের ক্ষমতা নেই।
মান্না বলেন, আমি বিএনপিকে বন্ধু ভাবতে চাই না। আমার কথা সঠিক হলে বিএনপি বলবে আমরা এটা করব। আমার কথায় ভুল থাকলে বিএনপি তা সমাধান করবে এবং ক্ষমতায় এলে বলবে এটাই আমরা করব। বিএনপি কেন কারো সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই।
শহীদ আসাদ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, তারা কিছু দাবি করলে পরিবর্তনের কথা বলেন। কিন্তু মানুষ জানে কে কি করছে। সেজন্য যারা আজ ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার বলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়। তারা অতীতে কোনো ভুল করে থাকলে জনগণের কাছে ক্ষমা চান।
“আজ, যখন আমরা আসাদকে স্মরণ করি, আমরা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হই,” তিনি বলেছিলেন। তার মধ্যে কোনো ভণ্ডামি থাকতে পারে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শহীদ আসাদ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ। গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, দক্ষিণের সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, শহীদ আসাদের ছোট ভাই ড.এম নুরুজ্জামান প্রমুখ।
কথাগুলোর সাথে সাথে তিনি সুস্পষ্ট যুক্তিও তুলে ধরেছে। তবে এসব মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি। আবার বিএনপিকে নিয়ে যে মতবাদ তিনি করেছেন তার উত্তরও এখনো বিএনপির কাছ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি। তবে এখন দেখার বিষয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের ব্যাপারে কোন কিছু বলেন কিনা।