Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আইন নয়, জাপানি মায়ের পক্ষে যে কারণে রায় দিয়েছেন আদালত

আইন নয়, জাপানি মায়ের পক্ষে যে কারণে রায় দিয়েছেন আদালত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ইমরান শরীফ এবং জাপানি নাগরিক ডা. নাকানো এরিকোর দাম্পত্য জীবনের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে চলমান মামলার রায় দিয়েছেন মাননীয় আদালত। এই মামলায় নাকানো এরিকোর পক্ষে রায় দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশের অবস্থান করা বড় দুই মেয়েকে মায়ের কাছে রাখার আদেশ দিয়ে আদালত রায় দিয়েছেন। তবে এই মামলায় মেয়ে দুটির ভালো থাকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন আদালত।

আইনে যাই থাকুক না কেন, দুই শিশু কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে শিশু দুটি কার কাছে থাকবে সেই বিষয়টি বিবেচনা করে মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের সন্তান জেসমিন মালেকা ও লায়লা লিনা মায়ের হেফাজতে থাকলে ভালো হবে বলে মনে করেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের মা নাকানো এরিকোও মেয়েদের নিয়ে জাপানে যেতে পারবেন।

বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফ তার দুই সন্তানকে হেফাজতে রাখার বিষয় নিয়ে দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ আদেশ দেন।

আইন অনুসারে, অভিভাবক বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝায় যে কোনও নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির অথবা শরীর ও সম্পত্তি উভয়ের নিরাপত্তার তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত থাকবেন। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, পুরুষ সন্তান সাত বছর বয়স পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তান বয়োসন্ধিকাল পর্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকবে। এক্ষেত্রে মায়ের অধিকার সবার আগে স্বীকৃত হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, হেফাজত নির্ধারণের ক্ষেত্রে নাবালক বা নাবালিকার হেফাজত নির্ণয়ে তাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল হবে এ বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক তথা সর্বাঙ্গীন মঙ্গল তাদের বাবা নাকি মায়ের কাছে নিশ্চিত হবে সে বিষয়টিকে মামলা নিষ্পত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জাপানি দুই সন্তান জাপানি দুই সন্তান তাদের বাবার কাছে থাকা মঙ্গল হবে বলে যে দাবি করা হয় তা তাদের বাবা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, নাবালিকা দুই সন্তানেরর থাকার জায়গা ছিল জাপান। তাদের মা জাপানি ডাক্তার। তাই মায়ের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা তার হেফাজতে থাকবে বলে মনে করছেন আদালত।

জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।

এদিকে প্রকৌশলী ইমরান শরীফের আইনজীবী নাসিমা আক্তার লাভলী বলেন, আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবো। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই সন্তানকে বিদেশে যেতে যাওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান ২৯ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। গত ১৫ জানুয়ারি একই আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

ইমরান শরীফ এবং নাকানো এরিকো ২০০৮ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০২০ সালের প্রথম দিকে তাদের দাম্পত্য কলহের কারণে নাকানো এরিকো ডিভোর্সের আবেদন করেন আদালতে। এই ঘটনার পর ইমরান শরীফ তার বড় দুই স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে হঠাৎ করেই বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেই সময়ে ছোট মেয়ে তার মায়ের কাছেই জাপানে ছিল।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *