Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / International / আইনি সুযোগ এখনো যেটুকু আছে তা কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

আইনি সুযোগ এখনো যেটুকু আছে তা কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বাধা থাকলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস সম্প্রতি সরকারকে সতর্ক করেছে যে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বাংলাদেশ। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে এ সতর্কতা নিয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকের পর আবারও নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জন উঠেছে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা না করার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র কতিপয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, এমনকি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে- এমন আলোচনা জোরালো হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করলেও সেখানে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ্যে বলছেন না কোনো পক্ষই। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছে যে রাষ্ট্রদূত হাস এবং পররাষ্ট্র সচিব মোমেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের “বর্তমান সমস্যা” নিয়ে আলোচনার জন্য একটি রুটিন বৈঠক করেছেন।  যদিও বিষয়টির সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হালচাল নিয়ে কথা বলেছেন।

সূত্র বলছে যে আমেরিকানরা মনে করে যে গ্রেপ্তার এবং মামলার ফাঁদে ফেলে একটি বড় দল ইতিমধ্যেই নির্মূল করা হয়েছে। এতে ভোটে অংশগ্রহণের পথ সীমিত হয়ে গেছে।  নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আইনি সুযোগ এখনো যেটুকু আছে, তা কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

অবাধ নির্বাচনের পথে বাধা থাকলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু শ্রমের মান বিবেচনায় আমেরিকানরা কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে তা প্রকাশ করেনি দেশটি। শ্রমের মান রক্ষা না করার অজুহাতে দেশটি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির সুযোগ সীমিত করার পথে যেতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

তবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে আছে বলে তিনি মনে করেন না। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে মোট রপ্তানির ১৭ শতাংশ যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ১৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করেই পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। রানা প্লাজা ধসের আগে পোশাক খাতে সীমিত আকারে জিএসপি সুবিধা কিছু পাওয়া যেত। ২০১৩ সালের পর সে সুবিধাও তুলে দেওয়া হয়েছে। কাজেই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।

তপন কান্তি ঘোষ আরও বলেন, কোনো দেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন নিয়মকানুন লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকতে হবে। বিশেষ করে শ্রমিকের বিরুদ্ধে সহিংস কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেখানে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই একদলীয় শাসন রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন অনেক দেশের সাথে ব্যবসা করে যেখানে গণতন্ত্র নেই, যেখানে একদলীয় শাসন আছে, যেখানে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নেই। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা খুবই উন্মুক্ত। এখানে গণতন্ত্রের চর্চা হয়।এমন অবস্থায় রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।।

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার গুজব প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সরকার বললেই পণ্য যাওয়া বন্ধ হয় না। কারণ, সেখানে বেসরকারি খাত পণ্য কেনে। তারা সরকারকে অনেক সময় পাত্তাই দেয় না। তারা কেনে; কারণ, ক্রেতারা ভালো মানের পণ্য ঠিক সময়ে সস্তায় পায়।

About Nasimul Islam

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *