চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে জেলা বার সমিতির গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন। যদিও সদস্যরা গত বুধবার এবং তার আগে পদত্যাগপত্র জমা দেন, বিষয়টি জনসমক্ষে আসে গতকাল শনিবার।
তদন্ত কমিটির প্রধান, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবদুস সাত্তার, গত বুধবার বার সমিতির সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর দুই দিন আগে বাকি চার সদস্যও পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. আবদুস সাত্তার বলেন, “আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এই ঘটনায় পুলিশ, প্রশাসন ও আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পৃক্ত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে, যা বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। এমন পরিস্থিতিতে আইনজীবীদের তদন্ত করলে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মতামত হচ্ছে, এই স্পর্শকাতর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে বিচারিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি, এ দায়িত্ব জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার কোনো বিচারকের ওপর অর্পণ করা উচিত। এ কারণেই কমিটির সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন।”
উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় তদন্তে জেলা বার সমিতি একটি কমিটি গঠন করেছিল।
এছাড়া ২৯ নভেম্বর নিহত আইনজীবী আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। একই দিন আলিফের ভাই বাদী হয়ে ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেন। এর আগে পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা দেওয়া, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। সব মিলিয়ে এই ছয়টি মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জন আটক রয়েছেন।