আগামী মাসেই চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আইজিপি বেনজিরের। অবসরের পরে তিনি অন্য কোনো দায়িত্ব পালন করতে চাই কিনা অনেকের মনে এই নিয়ে প্রশ্ন বাসা বেধেছে। এর আগে যারা যারা আইজিপির দায়িত্ব পালন করেছে তাদের অনেকেই অবসরের পরে বিভিন্ন সরকারি কাজে নতুন করে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গিয়েছে। বেনজিরও কি তাদের মত অন্য কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করবে এসকল বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের একজন জাতীয় সংবাদমাধ্যম একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে।
নিচে সেই সংবাদের কিছু অংশ উল্লেখ করা হলো:-
চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে বর্তমান আইজিপির মেয়াদ। বেনজীর আহমেদের চাকরির মেয়াদকাল। এরই মধ্যে তার অবসরের প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের বিভিন্ন স্তরে গুঞ্জন রয়েছে যে বেনজীর আহমেদকে পুলিশ প্রধান হিসেবে চাকরির মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হলেও নতুন কোনো সরকারি ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন তিনি রাজনীতিতেও যোগ দিতে পারেন। তবে অবসরে তিনি আসলে কী করবেন, তা নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে আইজিপি হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ওই বছরের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি বিশেষায়িত সংস্থা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বাহিনীর মহাপরিচালক। একইভাবে নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে পিএইচডি করেছেন। তিনি ১৯৮৮ সালে সপ্তম (বিসিএস) পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন।
এরপর তিনি কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার, ডিএমপির ডিসি উত্তর বিভাগ, পুলিশ একাডেমির প্রধান প্রশিক্ষক, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার টাঙ্গাইলের কমান্ড্যান্ট, পুলিশের ডিআইজি (প্রশাসন ও অপারেশন) এবং ডিএমপির পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বেনজির আহমেদ বসনিয়া ও কসোভোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দফতর, নিউইয়র্ক-এ এক বছর চিফ মিশন ম্যানেজমেন্ট এবং সাপোর্ট সার্ভিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কাউন্টার টেররিজম বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। প্রায় আড়াই বছর তার সর্বশেষ শীর্ষ পুলিশ পোস্ট থেকে বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর চলতি মাসেই তিনি অবসরে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি অবসরে যাওয়া চার আইজিপির মধ্যে দুজন এখনো রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরেকজন রাজনীতিতে যোগ দেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বেনজীর আহমেদও অবসরের পর যেকোনো দেশের রাষ্ট্রদূত হতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। আবার কেউ বলছেন, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে। তবে এ বিষয়ে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনা মহামারীতে দায়িত্ব নেওয়ার পর বেনজীর আহমেদ সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। যখন এমন ঘটনা ঘটেছে যে করোনার কারণে যারা মারা গেছে তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের পিছনে ফেলেছে, পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এসেছেন। সে কারণে রাজনীতিতে বেনজীর আহমেদের আগ্রহের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে অনেক চেষ্টা করেও বেনজীর আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
যদিও অনেকে ধারণা করছে বেনজীর আহমেদ অবসরের পরে রাজনৈতিক দলে অংশ নিতে পারে। তবে এটি শুধুই আনুমানিক একটি ধারণা। নিজে থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।