বিচার বহির্ভুত কর্মকান্ডের জন্য বাংলাদেশের এলিট বাহিনির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট এর পর থেকে দেশে এবং দেশের বাইরের মিডিয়াতে বাংলাদেশের এলিট বাহিনি র্যপিড একশন ব্যটেলিয়ন এর এই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট ঐ সময় র্যবের কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তার ভিসাও বাতিল করে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ৩১শে আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের চিফ অব পুলিশ সামিটে (ইউএনকপ) অংশ নিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদকে মনোনীত করা হয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তাকে অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে পুলিশ চিফ সামিটে বেনজীর আহমেদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজেরিক বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের নয়, বরং সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি মনোনীত করে। . যাইহোক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা এবং প্রবেশের অনুমতির এখতিয়ার রয়েছে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর স্থাপন সংক্রান্ত চুক্তি অনুযায়ী, জাতিসংঘ কর্তৃক আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের ভিসা দেওয়ার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের।
২০১৯ সালে, ইরানি কর্মকর্তাদেরও ভিসা দেওয়া হয়েছিল। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চলাচলে সীমাবদ্ধতা ছিল। আবার, নিষেধাজ্ঞার কারণে, ২০১৪ সালে, ওবামা প্রশাসন জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত-নিযুক্ত হামিদ আবুতালেবিকে ভিসা দেয়নি।
1988 সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন এর তৎকালীন চেয়ারম্যানকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের অনুমতি দিতে অস্বীকার করে। 1988 সালে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুধুমাত্র পিএলও নেতাদের উপস্থিতির সুবিধার্থে নিউইয়র্কের পরিবর্তে জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
1947 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জাতিসংঘের স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের দাপ্তরিক কাজের জন্য আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের কোন চার্জ ছাড়াই ভিসা প্রদান করবে এবং তারা কোন বাধা আরোপ না করে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদান করবে। তাদের ট্রানজিট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইরান ও কিউবাসহ অন্য অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক না থাকলেও চুক্তি অনুযায়ী ওইসব দেশের কর্মকর্তারা জাতিসংঘে দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে যাচ্ছেন। আইজিপি যুক্তরাষ্ট্রে নয়, জাতিসংঘ সফর করছেন, তাই তার ভিসা পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কোনো কারণ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, জাতিসংঘের কার্যক্রমে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে। তাই পুলিশের আইজির যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, র্যাবের মহাপরিচালক ড.বেনজির আহমেদ সহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট তাদের ভিসা বাতিল করে এবং মার্কিন মুলুকে প্রবেশে তাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।