আসাদুজ্জামান খান কামাল হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার দক্ষ পরিচালনার জন্যই দেশ থেকে স/ন্ত্রাস একেবারে নির্মূল হয়ে গেছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন আইজিপির যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া নিয়ে কাজ চলছে।
নিউইয়র্কে পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সফর নিয়ে ‘কাজ চলছে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্ক আছে, চুক্তিও আছে। তার ভিত্তিতে বেনজিরের বিদায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে সচিবালয়ে আসেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটার হাস।
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যেভাবে কাজ করা উচিত ছিল সেভাবে কাজ করেনি। আমরা বলেছি, র্যাব কোনো অবৈধ কাজ করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমি বলেছি, এখন র্যাব, পুলিশ সদস্যরাও কারাগারে, যারা অবহেলা করেছে। আমি একটি ঘটনার উল্লেখ করেছি, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনকারী অফিসারদের আজ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা হাইকোর্টে আপিল করেছেন, প্রক্রিয়া চলছে। যে পুলিশ সদস্যরা অন্যায় করছে তাদেরও শাস্তি পেতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমি এটাও বলেছি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। ঘটনাটি সঠিক ছিল কিনা তা যাচাই করার জন্য ঘটনার পরপরই একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। তিনি যদি মনে করেন এটা ঠিক নয় তাহলে ওই সদস্যকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
নিষেধাজ্ঞার পর আইজিপি কি আমেরিকা যেতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) বলেছেন, জাতিসংঘের সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। সে অনুযায়ী তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি শেষ হলে আপনি নিশ্চিত করতে পারেন। আমরা মনে করি জাতিসংঘ তাকে (আইজিপি) আমন্ত্রণ জানালে তিনি যাবেন। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি। সে জেনেশুনে যাবে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কী হল? জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। নির্বাচন পর্যন্ত ঠিক হবে কিনা জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার তিনি নির্বাচন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অব্যাহত রাখবেন। অনেক বিক্ষোভ, অনেক মিটিং, আমাদের এখানে ইয়ে নেই। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাদের বলতে চান, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে এবং তারা অন্য কোনো খাতে সহযোগিতা করতে পারে কি না তা জানতে চান। তারা মানব পাচার বন্ধে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমাদের নিরাপত্তার জন্য কিছু প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। তারা ইতিমধ্যে আমাদের দুই-তিন জায়গায় সহযোগিতার জন্য লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে আমরা খুব শীঘ্রই সমঝোতা স্মারক সই করব। এখন তারা শেষ পর্যায়ে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বলেছি, এ বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা আমরা লক্ষ্য করেছি। আমরা মনে করি তারা এই সমস্যা সমাধানে তাদের কণ্ঠ জোরদার করবে। এ ব্যাপারে এখন যে সহযোগিতা রয়েছে তা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার বিষয় তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসন মূলত নির্বাচন কমিশনের অধীনে আসে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার কাজ করবেন এবং আমরা আমাদের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় এবং গুলি চালানোর পর প্রতিটি ঘটনা একজন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা তদন্ত করা হয়। ওই তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার যথার্থতা যাচাই করা হয়।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ অনেক কিছু করেছে। তবে সেই সম্পর্ক জোরদার করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ড. বেনজির আহমেদ হলেন বাংলাদেশের পুলিশের মহাপরিদর্শক। এই সম্মানীয় পদে অধিষ্ঠিত হবার পর থেকে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ড. বেনজির আহমেদ এর পূর্বে র্যাব ও ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।