বি*স্ফোরক মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন আহমদকে গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দিয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শাহীনকে গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের খুলিয়াটুলা এলাকায় শাহীনের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর পরই বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, পোশাকে ৩ জন ও সাদা পোশাকে ২ জন পুলিশ নীল লুঙ্গি ও শার্ট পরা আওয়ামী লীগ নেতা শাহীনকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় পেছন থেকে আরেকজন লোক পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে লুঙ্গি পরা একজন এবং পেছনে লাল গেঞ্জি পরা আরেকজন পুলিশের পেছনে ছুটে যাচ্ছেন।
আরেকটি সিসি ফুটেজে দেখা যায়, সাদা পোশাকে ৩ জন এবং পোশাকে একজন পুলিশের পাশাপাশি শাহীন লুঙ্গি পরা অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। অন্য একটি ফুটেজে হাতে লাল ফাইল থাকা সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য ছেড়ে দেওয়া আসামি শাহীনকে একা নিয়ে তার বাসার দিকে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র মতে, কোতোয়ালি থানার কর্মকর্তারা শাহীনকে গ্রেপ্তার করলেও পরে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি, এ নিয়ে থানার এক সোর্সের সাথে এসআই ফখরুল ইসলামের বাগবিতণ্ডাও হয়। সোর্স ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ধরে যদি ছেড়ে দেবেন, তবে ধরলেন কেন?” এসআই ফখরুল তখন বিষয়টি গোপন রাখতে অনুরোধ করেন এবং এতে কমিশনের সুবিধা আছে বলে তাকে প্রলুব্ধ করেন।
গ্রেপ্তার বা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে এসএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার শাহরিয়ার আলম বলেন, “যদি আর্থিক সুবিধা নিয়ে ছাড়া হয়ে থাকে, তা কঠোরভাবে তদন্ত করা হবে।”
এছাড়া, সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি হবিগঞ্জের ফুড ইন্সপেক্টর হওয়ায় সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে বি*স্ফোরক মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার বা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ৩ আগস্ট সিলেটে ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় বি*স্ফোরক মামলা দায়ের করা হয়, যার আসামি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন আহমদ।