বাংলাদেশে আগামী দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে সেনাপ্রধান যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো কার্যকর সংস্কার বা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা অসম্ভব।’
সোমবার রয়টার্সে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘বাংলাদেশে দেড় বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন। এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জয় বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা একটা সময়সীমা পেয়েছি, এতে আমি খুশি। তবে আমি উদ্বিগ্ন যে, এই অন্তর্বর্তী সরকার এমন কিছু সংস্কার করতে চাইছে যা সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে।’
সজীব ওয়াজেদ জয় আরো বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রক্ষা করতে হলে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না। দেশের সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা অসম্ভব। এই বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্ভর করছে যে, তারা সঠিক পথে আওয়ামী লীগের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করবে, নাকি তাদের নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থানের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে আরও বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো সরকার দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারেনি। অতীতে আমরা দেখেছি, সামরিক শাসন এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সময়ে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা থমকে গেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।”
রক্তক্ষয়ী ছাত্র বিক্ষোভের সময় শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অস্বীকৃতি জানানোর পর ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন জয়। তিনি বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূলধারার সাথে সবসময় অঙ্গীভূত ছিল। কোনো নির্বাচন বা সংস্কার আমাদেরকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়।”
গত মাসে সজীব ওয়াজেদ জয় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসবেন এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তবে আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
তাকে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জয় বলেন, ‘এটা পুরোপুরি তার (শেখ হাসিনার) সিদ্ধান্ত। আমার দায়িত্ব হলো দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপদ রাখা এবং এই মুহূর্তে আমি ইউনূস সরকারের দ্বারা তাদের ওপর চালানো নির্মমতার কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে চাই।’
জয়ের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো ধরণের নির্বাচন বা সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হবে না।