বাংলা সিনেমার আশি ও নব্বইয়ের দশকের অন্যতম সুপার স্টার অভিনেতা আলমগীর। অ্যাকশন-কমেডিয়ান ও রোমান্টিক অ্যাকশন সিনেমায় অভিনয় করেও কোটি ভক্তের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। অভিনয় কর্মজীবনে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন গুণী এই অভিনেতা। তবে বেশকিছু বছর হলো, অভিনয়ে তেমন একটা দেখা মেলিনি তার। এদিকে ৫০ বছরের অভিজ্ঞতায় জনপ্রিয় এ অভিনেতা বলেন, বেশি বেশি কমার্শিয়াল সিনেমা অনুদান দিতে হবে।
আলমগীর বলেন, ভালো চিত্রনাট্যে ভালো সিনেমা নির্মাণ হয় না। একমাত্র ভালো পরিচালক ভালো সিনেমা নির্মাণ করতে পারে।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বক্তব্য দেয়ার সময় ৯বার চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নায়ক আলমগীর বলেন, সরকারী অনুদানে চিত্রনাট্য দেখে অনুদান দেয়া হয়। এতে করে ভালো সিনেমা নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই ভবিষ্যতে সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য ভালো পরিচালকদের বিবেচনা করে অনুদান প্রদান করা দেয়া উচিত।
সিনেমা হলে দর্শক যাচ্ছে না উল্লেখ করে আলমগীর বলেন, দর্শকদের হলে আনতে হলে ভালো সিনেমার বিকল্প নেই। যে সিনেমা দর্শক দেখে সেটাই হচ্ছে ভালো সিনেমা। যে সিনেমা হলে চলার পর দর্শক টানতে পারে না এই নাজুক সময়ে সেসব সিনেমার আপাতত প্রয়োজন নেই।
এ জন্য বেশি বেশি কমার্শিয়াল সিনেমা অনুদান প্রদানের জন্য সরকার ও অনুদান কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চিত্রনায়ক আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের দেশে হাতে গোনা ৩০-৪০জন ভালো পরিচালক আছে। ৩ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ১০জন পরিচালককে একটি করে সিনেমা দেয়া উচিত এবং সেই সিনেমার মালিক এফডিসি হলে তো সমস্যা নেই।
অনেক বছর আগে এফডিসি থেকে সিনেমা প্রয়োজনা হতো। অসংখ্য জনপ্রিয় সব সিনেমার নায়ক আলমগীর মনে করেন, চলচ্চিত্রের এই ক্রান্তিকালে আবারও এফডিসির প্রযোজনায় সিনেমা নির্মাণ হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, সিনেমা হল মালিকদের বলা হচ্ছে ১০ কোটি করে টাকা লোন দেয়া হবে। কিন্তু তারা নড়েচড়ে বসছেন না। কারণ তাদের কাছে কনটেন্ট (সিনেমা) কোথায়? অনুদান দিয়ে যেসব সিনেমা হচ্ছে সেগুলো সিনেমা হলে চালাতে তারা ভয় পাচ্ছে।
নিজের উদাহরণ দিয়ে আলমগীর বলেন, আগামী ২৪ জুন চলচ্চিত্রে আমার অভিজ্ঞতা ৫০ বছর। আমি এখন সিনেমা না করলেও ৫০ বছরের সেই অভিজ্ঞতা চলচ্চিত্রের উন্নতিতে দিতে পারি। অস্ত্র জমা দিলেও ট্রেনিং জমা দেইনি। কাজেই আমার অভিজ্ঞতা চলচ্চিত্রের ভালোর জন্য কাজে চালানোর জন্য সরকারের কাছে সুযোগ চাই।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে ‘আমার জন্মভূমি’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় প্রথমবারের মতো পা রাখেন আলমগীর। তবে পরবর্তীতে আলোচনায় আসেন ‘জিঞ্জীর’ সিনেমার মাধ্যমে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্য রয়েছে, ‘মা ও ছেলে’, ‘ক্ষতিপূরণ’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘কে আপন কে পর’, ‘অন্ধ বিশ্বাস’, ইত্যাদি।