দিনে দিনে বেড়েই চলেছে প্রতারক চক্র । বাংলাদেশের( Bangladesh ) বিভিন্ন অঞ্চলে এসকল প্রতারক চক্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ছলে বলে কৌসলে এসব প্রতারক চক্র তাদের কার্য়সিদ্ধীর জন্য সাধারন মানুষের সরলতার সুযগ নিয়ে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের অর্থ, সম্পদ ইত্যাদি। নিশ্ব করে দেয় সাধারন মানুষের জীবন। এদের হাত থেকে ছাড় পায়না নারি পুরুষ ধনি গরিব কেউই। এমনি এক প্রতাকর চক্র বিদেশি এজেন্সির নামে দীর্ঘদিন ধরে মানুষে সাথে প্রতারনা করে আসছে।
বিনা পয়সায় বিদেশে পাঠানোর নামে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে স্বল্প শিক্ষিত ও অশিক্ষিত নারী-পুরুষকে টার্গেট করে রাজধানীতে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদের পাসপোর্ট আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া বিদেশে পাঠানোর নামে প্রশিক্ষণের জন্য মেয়েদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। এ পর্যন্ত শত শত নারী-পুরুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। যে সংস্থার নামে প্রতারক লোক বিদেশে পাঠানোর কাজ করছিল তারও কোনো বৈধতা নেই। বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চারজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পারে র্যাব( Radhab ) কর্মকর্তারা।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার( Saturday ) (৫ মার্চ( March )) রাতে( At night ) রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে শেখ ফরিদুল ইসলাম( Sheikh Faridul Islam ) (৪৮)কে গ্রেপ্তার করা হয়। আব্দুল হান্নান ওরফে পলান (৬০), নাদিম মিয়া( Nadeem Mia ) (৩৮) ও বাবুল উদ্দিনকে( To Babul Uddin ) (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত চার নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৪৪টি পাসপোর্ট, একটি জালিয়াতি রেজিস্টার, দুটি ডায়েরি, ২৪টি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প, ১০টি ভিজিটিং কার্ড, তিনটি এটিএম কার্ড, বিভিন্ন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধনের ১২১টি ফটোকপি, একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক শিট ও একটি এনআইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব( Radhab ) জানায়, গ্রেফতারকৃত শেখ ফরিদুল ইসলাম( Sheikh Faridul Islam ) ওই চক্রের মূল হোতা এবং অন্য গ্রেফতারকৃত সদস্যরা তার সহযোগী। তারা কিশোরগঞ্জ( Kishoreganj ) জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গরিব ও সহজ-সরল তরুণীদের কাছ থেকে বিনা টাকায় বিদেশে পাঠানোর কথা বলে পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। বিদেশ পাঠানোর নামে শত শত মানুষকে প্রতারণা করেছে চক্রটি। এই চক্রের সদস্যরা সাধারণত গার্মেন্টস এবং বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক, চালক, সিএনজি চালক, গৃহকর্মী ইত্যাদিকে টার্গেট করে। চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় 40 লাখ থেকে 50 লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে।
র্যাব( Radhab ) আরও জানায়, প্রতারকরা সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষকে টার্গেট করে। প্রবাসে তারা বর্তমান বেতনের দুই থেকে তিনগুণ প্রতিশ্রুতি দিতেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেন। অন্যদিকে দ্বিগুণ/তিনগুণ বেতনে বিদেশে স্বল্প খরচে ভ্রমণ করা যায়, এতে স্বল্প আয়ের মানুষ সহজেই প্রলুব্ধ হয়ে যেত। বিদেশে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। কয়েকজনের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও বিদেশে যাওয়ার লোভে সেই টাকা প্রতারক চক্রের সদস্যদের ধার দিয়েছে। এভাবে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
শেখ ফরিদুল ইসলাম( Sheikh Faridul Islam ) দীর্ঘদিন ধরে ভাটারা থানা এলাকার বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতেন। পরে সাবলেট একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে অফিস স্থাপন করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এমনকি ওই অফিসে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশে যেতে চাওয়া তরুণীদের প্রশিক্ষণের কথা বলে প্রতারণার আড়ালে বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগী নারীরা জানান, এলাকার কয়েকজন দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। আমাদের বলা হয় প্রশিক্ষণ ছাড়াই বিদেশে গিয়ে আপনি ভালো বেতনের চাকরি পেতে পারেন। ঢাকায়( In Dhaka ) আসার পর আমাদের একটি হোটেলে আটকে রাখা হয় এবং আমাদের পাসপোর্ট আটকে রাখা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। ‘
র্যাব( Radhab )-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ফলে অফিস ভাড়া কম ছিল এবং সহজেই অফিস পরিবর্তন করা যেত। তারা বিভিন্ন রিক্রুটিং কোম্পানির নামে ভিজিটিং কার্ড ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে বিদেশগামী লোকদের দেখিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করত। গ্রুপের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য , এমন প্রতারনার ঘটনা বাংলাদেশে কোথাও না কোথাও ঘটিই চলেছে। তবে এসকল প্রতারকেদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হলেও, অধিক অংশ প্রতারকেরা আদালতে গিয়ে কোন না কোন ভাবে ছাড়া পেয়ে আবারো জড়িয়ে পড়ছে এসল অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে, এমনি মন্তব্য করেছেন সাধারন জনগন। এসকল প্রতারকদের কঠোর শাস্তির দাবি যানিয়েছেন ভুক্তভুগিরা।