Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Exclusive / অর্ধশত নারীর শতকোটি টাকা বেনজির পকেটে, ধরা পড়ার পর ফাঁস করলো সব গোপন তথ্য

অর্ধশত নারীর শতকোটি টাকা বেনজির পকেটে, ধরা পড়ার পর ফাঁস করলো সব গোপন তথ্য

নড়াইলের বেনজির হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রায় অর্ধশতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক আমেরিকান পাইলটের ফেসবুক আইডি নকল করে পাঁচ বছর ধরে ‘রোমান্স স্ক্যাম’ করে তার সম্পদ গড়ার তথ্য পেয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। সিটিটিসি বলেছে যে বেনজির ফেসবুকে একটি নকল ফ্লার্টেটিং প্রোফাইল তৈরি করেছিল যেখানে প্রতারকরা নিঃসঙ্গ নারী, সিঙ্গেল মাদারদের টার্গেট করে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। পরবর্তীতে বিয়ে করে পরিবারকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। প্রথমে ট্রাস্ট তৈরি করে এই প্রতারক সেই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

বেনজিরকে গ্রেপ্তারের পর সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো.আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, শহীদ হাসান নামে আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি পাইলটের প্রোফাইল হুবহু কপি করে বেনজির একটি ভুয়া ফেসবুক প্রোফাইল তৈরি করেন। প্রোফাইলটিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে তিনি নিয়মিত শহীদ হাসানের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বিমানের ভেতরের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতেন। প্রতারক বেনজির বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও পেজে নিঃসঙ্গ নারীদের টার্গেট করে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে প্রথমে তাদের প্রেমে প্রলুব্ধ করে, তারপর তাদের বিয়েতে প্রলুব্ধ করে এবং তাদের পরিবারকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখায়। তিনি ভিকটিমদের সাথে অডিও কলে কথা বলেছেন কিন্তু ভিডিও কলে কখনোই কথা বলেননি। প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিপদে পড়েছেন এমন কথা বলে তার দেওয়া বিভিন্ন নগদ নম্বরে ধাপে ধাপে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন (জালিয়াতে ব্যবহৃত ১৯টি নগদ নম্বর জানা গেছে)।

বেনজিরের বাড়ি নড়াইলে হলেও প্রতারণার টাকা ক্যাশ আউট করতেন বাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে যশোর ও খুলনার বিভিন্ন নগদ ক্যাশ আউট পয়েন্টে। তার প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিম ও নগদ নম্বর নিবন্ধনে ব্যবহৃত এনআইডি অন্য ব্যক্তির নামে রয়েছে। ক্যাশ আউট করার সময়, প্রতারক বেনজি তার পরিচয় এবং মুখ লুকানোর জন্য একটি ক্যাপ, সানগ্লাস এবং মুখোশ পরতেন। সিটিটিসি জানিয়েছে, ছয় মাসে এক সিঙ্গেল মাদার প্রায় এক কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে জানিয়েছে সিটিটিসি। আসাদুজ্জামান বলেন, বেনজিরের ফাঁদে ওই নারীর এক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আরেক নারী ১৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। এমন ৫০ জন নারীর তথ্য পাওয়া গেছে।

বেনজির আরও অনেক নারীর তথ্য মুছে দিয়েছেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন এজেন্ট নম্বর থেকে গড়ে ১৫-২০ লাখ টাকা তুলতেন।

বেনজিরের সম্পদের পাহাড়: আয়ের দৃশ্যমান কোনো উৎস না থাকা সত্ত্বেও নড়াইলে ৫ বিঘা জমির ওপর বাগানবাড়ি (২ তলা ডুপ্লেক্স ভবন), সম্প্রতি আনুমানিক ৩ বিঘা জমিতে বিলাসবহুল ভবন কেনা, নড়াইলে বিভিন্ন স্থানে আনুমানিক ২০ বিঘা মাছের খামার, বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নড়াইলের স্থান; যশোর, সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বহুতল ভবন ও ব্যাংক ব্যালেন্সের তথ্য পাওয়া গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. আসাদুজ্জামান বলেন, বেনজির এইচএসসি পাস করে চাকরিতে যোগ দেন। চুরির কারণে সেই চাকরি চলে যায়। সে খুবই নিম্নবিত্ত পরিবারের। তার বাবা এলাকার বিভিন্ন বাজারে খেজুরের খোসা বিক্রি করতেন। তবে বেনজির ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তার কোনো বৈধ পেশা নেই।

About Nasimul Islam

Check Also

চুলের মুঠি ধরে নারী চিকিৎসককে রোগীর মারধর (ভিডিও সহ)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *