গত ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার শেষ রাতের দিকে ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এমভি অভিযান-১০ নামক একটি লঞ্চে ইন্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে সমস্ত লঞ্চটিতে আগুন ছড়িয়ে যায়। ঐ লঞ্চটিতে ৮০০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল যাদের মধ্যে ছিল অনেক নারী ও শিশু। এই দূর্ঘটনায় বর্তমান সময় পর্যন্ত ৪৬ জন প্রয়াত হয়েছেন এবং অনেকে আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় সেখানে একটি হৃ’দয়বি’দারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। সেই সময় নদীর পাড়ের আশেপাশের মানুষ লঞ্চের যাত্রীদের জীবন বাঁচানোর জন্য ছুটে আসেন। সেই সময় স্থানীয়দের অনেকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন যার মধ্যে ছিলেন মিলন খান নামের একজন ট্রলারচালক।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৩০০ যাত্রীকে বিনা ভাড়ায় নদী পার করানো ট্রলারচালক মিলন খানকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন পুলিশ সুপার (এসপি) ফাতিহা ইয়াসমিন। এ সময় মিলন খানের কৃতিত্বের জন্য এসপি তাঁকে ধন্যবাদ জানান। পুলিশের সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিলন খান।
অর্থ সহায়তা পাওয়ার পর ট্রলারচালক মিলন খান জানান, জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ৩০০ যাত্রীকে উদ্ধারে কাজ করেছেন তিনি। বিপদগ্রস্ত যাত্রীদের বিনাভাড়ায় নিরাপদে তীরে পৌঁছে দিয়েছেন।
তাঁর এ কৃতিত্বে খুশি এলাকার মানুষ। শুধু মিলন নন, নদীপাড়ের দুই গ্রাম দিয়াকুল ও চরবাটারাকান্দার গ্রামবাসীও অংশ নেন উদ্ধারকাজে।
ঝালকাঠির এসপি ফাতিহা ইয়াসমিন বলেন, ‘মিলন খান যে কাজটি করেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি প্রথমে বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখেছি। আগুনের খবর পেয়ে তিনি নিজের ট্রলার নিয়ে বিনা ভাড়ায় মানুষকে পারাপার করেছেন। আমি তাঁকে সামান্য উপহার দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, শুধু মিলন নয় সেই সময় অনেকে লঞ্চে থাকা যাত্রীদের সহয়তার জন্য এগিয়ে আসেন। অনেকে লঞ্চটির ওপর উঠে সাহায্য করেন। অনেকে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাপিয়ে পড়া যাত্রীদের তুলতে নৌকা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন, আবার অনেকে নদীর পাড়ে যাত্রীদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের মানবতায় অনেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। গভীর রাত থাকায় দূর্ঘটনার সাথে সাথে আশেপাশের মানুষ কিছুটা পরে টের পেয়েছিলেন।