সর্বজনীন পেনশন সুবিধায় নিবন্ধন পদ্ধতির ভিডিও প্রকাশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। এ সময় সার্বজনীন পেনশন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্যের সরাসরি জবাব দেন জয়।
মন্তব্য কক্ষে বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্যে আহাদ খান নামে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘প্রতি মাসে জমা করতে গিয়ে হয়তো ম্যাচিউর হওয়ার আগেই মা/রা যাবো, তাহলে এই টাকার মালিক কে হবে?’
জবাবে সজিব ওয়াজেদ বলেন, অর্থ জমার পর জমাকারীর মৃত্যু হলে সেই অর্থ তার নমিনি পাবেন।
মফিজুল ইসলাম রাকিব নামের আরেক ব্যক্তি জানতে চান, এটা নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে কি না? জবাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা পেনশন সুবিধার সম্পূর্ণ তালিকাসহ একটি ভিডিও দেন।
রামিম খান নামের এক ব্যক্তি এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানালেও সরকার পরিবর্তন হলে সাধারণ মানুষ পেনশন প্রকল্প নিয়ে সমস্যায় পড়বেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এই প্রশ্নটি গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন। এ প্রশ্নের জবাবে সজিব ওয়াজেদ জয় বলেন, পেনশন স্কিম বাংলাদেশের জনগণের জন্য, বাংলাদেশের মানুষ ও রাষ্ট্র এই টাকার মালিক। এই স্কিমটি সাধারণ মানুষের জন্য, সরকার যেই হোক না কেন, আপনার পেনশনের টাকা আপনার এবং আপনার মনোনীত ব্যক্তির।
এই পোস্টের মন্তব্যে, অনেকেই সর্বজনীন পেনশন সুবিধা চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ সার্বজনীন পেনশনের বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য সজীব ওয়াজেদকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এছাড়াও যারা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ।
ভিডিওটি সার্বজনীন পেনশনের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। এছাড়াও এর বিভিন্ন সুবিধা ও নিয়মাবলী পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা মাথায় রেখে এই সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ১৩ আগস্ট, সরকার সর্বজনীন পেনশন নিয়ম চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করে। গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
বর্তমানে চারটি শ্রেণীর জনসংখ্যার জন্য চারটি স্কিম রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য প্রগতি স্কিম, স্ব-নিযুক্ত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম এবং স্বল্প আয়ের স্ব-নিযুক্ত নাগরিকদের জন্য সমতা স্কিম।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত আজীবন পেনশন উপভোগ করবেন এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সী একজন সুবিধাভোগী ১০ বছরের ন্যূনতম অবদানের সাপেক্ষে আজীবন পেনশন উপভোগ করবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মৃ/ত্যু হলে, পেনশনভোগীর মনোনীত ব্যক্তি ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময়ের জন্য পেনশন পাওয়ার অধিকারী হবেন।
এছাড়াও, কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে গ্রাহক মা/রা গেলে, মুনাফার সাথে জমাকৃত অর্থ মনোনীত ব্যক্তিকে ফেরত দেওয়া হবে। গ্রাহকের আবেদনের ভিত্তিতে জমাকৃত পরিমাণের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত অবদানগুলিকে বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করা হয় এবং কর ছাড়ের জন্য যোগ্য এবং মাসিক পেনশনের পরিমাণ আয়কর থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
তবে সরকারি কর্মচারীরা এই কর্মসূচির আওতায় নেই। এছাড়াও ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ চাঁদা দিয়ে এই পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেন।
পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে প্রথমে পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য ‘ইউপেনশন’ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। কেউ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেনশন প্রোগ্রামে যোগ দিতে পারেন।
https://www.facebook.com/watch/?v=312390654511830