নির্বাচনের আর দুই সপ্তাহেরও কম বাকি। এ অবস্থায় বিরোধী দলের ভোট বয়কট প্রচার উপেক্ষা করে ভোটারদের ভোট বুথে ঘুরিয়ে নেওয়াই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তবে বসে নেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল। ভোটারদের বুথে আনতে তারা ইতোমধ্যে অভিনব কৌশল গ্রহণ করেছে। যা ২০১৪ সালে বিজেপি সভাপতি হওয়ার পর অমিত শাহের ‘বুথ লেভেল ম্যানেজমেন্ট’ তত্ত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মোট ৩০০ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন ভোটারদের বুথে আনতে ইতোমধ্যে বহুমুখী কৌশল নিয়েছে হাসিনার দল। ধারাবাহিক প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি শুরু হয়েছে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশিক্ষণ। এর মধ্যে একটি হলো ‘রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন’ নামের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। দেশের সংবাদপত্রে খবরে বলা হয়েছে, এই প্রশিক্ষণটি ছিল নির্বাচনের দিন ভোটারদের বুথে নিয়ে আসার ব্যবস্থাপনা শেখানো।
বাংলাদেশের শাসকদল সূত্রের খবর, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৩০০টি আসনে প্রায় আড়াই লক্ষ ‘প্রার্থনা কর্মী’র বাহিনী গড়া হবে। তারা ভোটের দিন দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোটারদের বুথে যেতে অনুরোধ করবেন এবং বুথে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে ‘অফলাইন ক্যাম্পেইন’ নামে একটি কর্মসূচিতে ‘প্রশিক্ষিত প্রচারণাকারীরা’ ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের অনুরোধ জানাবেন।
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও তাদের মিত্র জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাগরিকদের কাছে ভোট বয়কটের আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে প্রচারেও নেমেছে তারা। একই পথে হেঁটেছে কয়েকটি বামদলের জোটও। বাংলাদেশ সমাজতন্ত্রী দল (বাসদ), বিপ্লবী কমিউনিস্ট লিগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক পার্টি-সহ একাধিক বাম দল রয়েছে ওই জোটে। ভোট বয়কটকারী দলগুলি নিরপেক্ষ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার ইতিমধ্যেই নির্বাচনে অংশ না-নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলির সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এরপর ‘অরাজনৈতিক’ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ভোট বয়কটের নতুন কৌশলের প্রচার চালাচ্ছে বিরোধীরা। তা মোকাবেলায় কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। প্রসঙ্গত, শাহ বিজেপির সভাপতি হওয়ার পর সারা দেশে বিজেপি সংগঠনে ‘বুথ ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা’র নতুন ব্যবস্থায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এই উদ্দেশ্যে ‘পন্না প্রমুখ’ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তিনি। তাতে ভোটার তালিকার এক একটি পৃষ্ঠায় থাকা ভোটাদাতাদের দায়িত্ব এক এক জন বিজেপি নেতার উপরে থাকত। হাসিনার দলও দাবি করে যে ভোটারদের বুথে আনতে স্থানীয় নেতাদের ‘এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব’ দেওয়া হচ্ছে।