সম্প্রতি টলিউডের নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জী না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার পর, শোকের ছায়া নেমে এসেছে টালীগঞ্জে। ( Taliganj) বিষয়টি দীর্ঘ দিনের সহকর্মীদের মনে প্রভাব ফেলেছে। অভিনেতা প্রসেনজিৎ, খবরটি শোনার পর অনেকটা নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। গণমাধ্যম কর্মীরা অভিনেতা প্রসেনজিৎ এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, দীর্ঘ দিনের সহকর্মীকে হারিয়েছেন, তার সম্পর্কে কিছু বলুন। গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, আজকে আমি কিছুই বলতে পারছি না।
একের পর এক প্রয়ানের খবরের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। সকালে অভিষেকের খবর শোনার পর এই প্রথম আমি মিডিয়াকে বলেছি, আমি এর প্রতিক্রিয়া জানাতে পারছি না, ক্ষমা করবেন। অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জির প্রয়ানের প্রতিক্রিয়ার কথা বলেছেন। টলিউডের নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জি বুধবার ( Wednesday ) (২৩শে মার্চ ) কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ ( Prince Anwar Shah ) রোডে তার বাড়িতে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অভিষেকের সঙ্গে কাটানো মজার মুহূর্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রসেনজিৎ বলেন, “ওর বিয়েতে আমি ধন্য হয়েছিলাম”। আজ সেই দিনটির কথা মনে পড়ে। আমি তার সঙ্গে কিছু ভালো স্মৃতি রেখে যেতে চাই। তার জন্য আর কোনো শব্দ ব্যবহার করতে পারব না। নব্বই দশকে বাংলা চলচ্চিত্র জগত ( Past )ের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা ছিলেন অভিষেক। এক সময় তাপস পালের ( Tapas Pal ) সঙ্গে মিল রেখে নাম পেতেন প্রসেনজিৎ।
অভিষেককে পর্দায় দেখা গেছে উৎপল দত্ত ( Utpal Dutt ), সৌমিত্র চ্যাটার্জি ( Soumitra Chatterjee ), সন্ধ্যা রায়ের মতো প্রতিভাবান অভিনেতাদের সঙ্গে। শতাব্দী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ( Rituparna Sengupta ), ইন্দ্রানী হালদার ( Indrani Haldar ) প্রথম সারির অভিনেত্রীদের নায়ক। অভিষেক চ্যাটার্জি ১৯৬৪ সালের ৩০ এপ্রিল ( April ) জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে তরুণ মজুমদারের ( Majumdar ) ছবি পাঠভোলা সিনেমায় যাত্রা শুরু করে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো দহন, বাড়িওয়ালি, মধুর মিলন, মায়ের আঁচল,আলো,নীলাচলে, কিরীটী।
শুধু বড় পর্দায় নয়, ছোট পর্দায়ও সমান সাবলীল অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। তবে টালিউডে ( Tollywood ) অনেকদিন অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। এ নিয়ে কথা বলতেও আফসোস করেছেন অভিনেতা। তাঁর অভিযোগ, টলিউডে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক জানিয়েছেন, রাজনীতির কারণে একের পর এক ছবি থেকে বাদ পড়তে হয়েছে তাঁকে। তখন যাত্রাপালা ও মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে সংসার চালাতে হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরেই টেলিভিশনের পর্দায় অভিষেকের কণ্ঠের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। ইচ্ছেনদী, পিতা, অপুর সংসার, অন্দরমহল, কুসুম দোলা, ফাগুন বউ, খড়কুটো-এর মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দর্শকদের মন জয় করা অনেক সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন। তারপরেও রাজনৈতিক কারণে তাকে ছিটকে পড়তে হয়েছিল সিনেমা থেকে। জীবিকার তাগিদে যাত্রাপালা নাটকে অভিনয় করতে হয়েছে তাকে। শেষ বিদায় বেলায় তার উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল টিভির ছোটপর্দায় নাট্য অভিনেতা হিসেবে।