Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / অভিযোগ নিলেন না ওসি, কর্মকর্তাকে বললেন, বেঁচে রয়েছেন তাই শুকরিয়া করেন

অভিযোগ নিলেন না ওসি, কর্মকর্তাকে বললেন, বেঁচে রয়েছেন তাই শুকরিয়া করেন

বাসের টিকিট পাননি তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানা এলাকা থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য তিনি একটি প্রাইভেটকারে উঠে বসেন। আল মামুন নামের ওই ব্যক্তি পেশায় একজন বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তার প্রাইভেটকারটি নরসিংদী পৌঁছালে, ওই প্রাইভেট কারে যাত্রীর ছদ্মবেশে থাকা ডাকাত দলের সদস্যরা তার হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর তার গলায় ছু”/রি ধরে তার কাছে থাকা সমস্ত টাকা এবং দামি মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেয়।

মানিব্যাগে একটি ব্যাংক কার্ড ছিল। পরে আল-মামুনের কাছ থেকে গোপন নম্বর জেনে হ”ত্যার হুমকি দিয়ে নরসিংদীর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ডা”কাতরা ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তারা আল-মামুনকে হাত-পা বেঁধে পকেটে থাকা ২০০ টাকা নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বাবুরহাট এলাকায় একটি হোটেলের সামনে ফেলে রেখে যায়।

গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শ্যামপুর এ শাখার কর্মকর্তা আল-মামুন ঢাকা থেকে ভৈরব যাওয়ার পথে ছি”নতাই হন। ওই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল-মামুন গত শনিবার বলেন, রাত গভীর হলে ডাকাতরা তাকে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। তিনি কাছাকাছি একটি বাজারে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইল ফোন থেকে জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন। এরপর নরসিংদী সদর ও মাধবদী থানার সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। দুই থানার পুলিশ কথা বলে তাকে মাধবদী থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু থানায় কোনো অভিযোগ না নিয়ে তাকে ঢাকার একটি বাসে তুলে দেওয়া হয়।

আল-মামুন জানান, ঘটনার চারদিন পর আবারও লিখিত অভিযোগ নিয়ে নরসিংদী যান। তিনি বলেন, অভিযোগ দেখে নরসিংদী সদর থানার ওসি বলেন, আপনি ব্যাংকে চাকরি করেন, কীভাবে এই ভুল করলেন? বেঁচে আছেন শুকরিয়া করে চলে যান।’

ডাকাতরা কীভাবে ব্যাংক কার্ড দিয়ে এত টাকা নিয়ে গেল জানতে চাইলে আল-মামুন বলেন, কার্ডের গোপন নম্বর দিয়ে রাত ১২টার আগে ৯১ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। বাকি টাকা রাত ১২টার পর তোলা হয়।

যা বললেন দুই থানার ওসি

আল–মামুন জানান, ঘটনার পর ৯৯৯–এ ফোন করলে মুঠোফোনে কনফারেন্সে তাঁর সঙ্গে নরসিংদী সদর ও মাধবদী থানার পুলিশ সদস্যদের কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। দুই থানার অফিসাররা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কাছে ছুটে যান। তাকে নিয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাকে মাধবদী থানায় নিয়ে যান।

আল-মামুন বলেন, আমাকে থানায় নেওয়ার পর পুলিশ আমার অভিযোগ নেয়নি এবং ঘটনাস্থল তাদের থানা এলাকার মধ্যে নয় বলে জানায়। এমন পরিস্থিতিতে আমি ভয়ে কাঁপছিলাম। তখন পুলিশকে বললাম, রাত হয়ে গেছে, আমাকে থানায় থাকতে দিন, সকালে চলে যাব। কিন্তু পুলিশ ভোর সাড়ে চারটার দিকে গাড়িতে করে আমাকে ১০০ টাকা দেয়।

আল-মামুন জানান, ঢাকায় ফেরার দুদিন পর গত মঙ্গলবার নরসিংদীর পুলিশ সুপারকে ফোনে বিষয়টি জানান। এরপর ওই নম্বর থেকে তাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে বলা হয়। পরদিন তিনি লিখিত অভিযোগ নিয়ে নরসিংদী সদর থানায় যান।

তখন ওসি তাঁকে শুকরিয়া করার পরামর্শ দেওয়া পাশাপাশি কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় যেতে বলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ঘটনার সূত্রপাত ভৈরব থানা এলাকা থেকে। আর তাকে যেখানে ফেলে রাখা হয়েছে, সেটি মাধবদী থানার এলাকায় পড়ে। এর জন্য কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

তবে তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন মাধবদী থানার ওসি রকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, “নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে ভি”কটিমের ব্যাংক কার্ড থেকে টাকা তোলা হয়েছে। আর যেখানে তাকে ফেলে ফেলে গেছে সেটি দুই থানার সীমান্ত এলাকা। ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, “আমার থানা এলাকায় কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়নি। তারপরও ভি”কটিম যদি আমার থানায় অভিযোগ করতে চায়, আমি তার অভিযোগ নেব।’

তবে এ ঘটনার পর ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তেমন কোন সুবিধা জনক সুরাহা পাননি বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কোন প্রাইভেট কার এবং ওই স্ট্যান্ডের কারো সাথে পরিচয় ছিল কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে। মোবাইল ফোনটি অপরা”ধীদের শনাক্ত করতে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

About bisso Jit

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *